সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > রাজনীতি > সংলাপ শেষে আশার মুকুল ঝরতে শুরু করেছে: রিজভী

সংলাপ শেষে আশার মুকুল ঝরতে শুরু করেছে: রিজভী

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সংলাপে মানুষের মনে যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে।

শুক্রবার রাজধানীর নয়পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারি জোটের সংলাপে সরকারের একগুঁয়ে মনোভাব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অশনি সংকেত। সংলাপ শেষে ৭ দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেয়ায় আওয়ামী অনঢ়তায় সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণুতার শিক্ষা কখনোই গ্রহণ করেনি। ক্ষমতা-স্বার্থের লীলাধিপত্য বজায় রাখতে তারা জনগণকেই ভয় পাচ্ছে। জনগণের মুণ্ডুপাতই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্য নীতি।

সংলাপ চলাকালেও রাতে দেশব্যাপী বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়ের অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, খুলনায় রাতভর নেতা-কর্মীদের বাড়ি-বাড়ি পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। সংলাপের জিকির তুলে একদিকে জনগণকে দেখাচ্ছে তারা কত আন্তরিক। অন্যদিকে সমানতালে নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতা অব্যাহত রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী সংলাপের ভাষণে রাজনৈতিক মামলায় কারা আছেন তাদের তালিকা চেয়েছেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তার দশ বছরের শাসনামলে বিরোধী দলের কাদের নামে মামলা দিয়ে বারবার কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে সেটি কি প্রধানমন্ত্রীর অজানা? আসলে পুলিশি শক্তির ব্যবহার ছাড়া আওয়ামী জোট সরকারের আর কোন ভিত্তি নেই।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাশূন্য করে একতরফা নির্বাচনের নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র হাতে থাকলে সবকিছুই করা যায়। ক্ষমতাসীনদের মামলাগুলো ঝরে যায় আর বিরোধীদের মামলা পুষে রাখা যায়। শেখ হাসিনার ক্রোধের শিকার খালেদা জিয়া এবং তার সন্তান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই গণবিচ্ছিন্ন পরনির্ভরশীল আওয়ামী সরকার জিয়া পরিবারকে ধ্বংসের যে মানচিত্র করেছে, সেই অঙ্কিত নকশানুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে।

সরকার অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকলে সাত দফা দাবি রাজপথেই আদায় করতে হবে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, সরকারের যদি বোধদয় হয়, যদি একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য আন্তরিকতা থাকে, যদি দেশকে বিভেদ ও বিভাজনের দিকে তারা ঠেলে না দেন তাহলে আবার তারা বসবেন। বসে এমন একটা ঐকমত্য তৈরি করবেন, যেখানে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে নির্ভয়ে যেতে পারবে এবং অবশ্যই সেটা নির্দলীয় সরকারের অধীনে হবে। অবশ্যই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে- এ ব্যাপারে আমরা আপসহীন।

নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যায় অবিচারে বন্দি খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হবে আত্মঘাতী। দেশকে গণতন্ত্রমুখী করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আর নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন করা হবে মৃত্যুকূপে ঝাঁপ দেয়া। যে সরকার জনমতকে পাত্তা দেয় না সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা বোকার স্বর্গে বাস করা।

আগামী ৬ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জনসভা করতে চায় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান রিজভী। তিনি বলেন, আগামী ৬ নভেম্বর জনসভা করার জন্য ইতোমধ্যে অনুমতি চেয়েছি। এজন্য প্রয়োজনীয় অফিসিয়াল কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি, পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছি। গণপূর্ত আমাদের বলেছে, পুলিশের অনুমতি পেলে তাদের কোনো আপত্তি নাই।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনীর হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা প্রমুখ।