বুধবার , ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ , ১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > আন্তর্জাতিক > চিকিৎসার খরচ যোগাতে বিক্রি করতে হয়েছে নোবেল

চিকিৎসার খরচ যোগাতে বিক্রি করতে হয়েছে নোবেল

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥

‘ঈশ্বরকণা’র কথা তার মুখেই প্রথম শোনা গিয়েছিল। ১৯৯৩ সালে নিজের বইয়ে হিগস-বোসন কণার বর্ণনা দিয়ে তিনিই লিখেছিলেন ‘গডস পার্টিকল’। পদার্থবিদ্যায় নোবেল সম্মান পেয়েছেন আরও আগে, সেই ১৯৮৮ সালে। যদিও শেষ সময়ে এসে চিকিৎসার খরচ যোগাতে সেই নোবেল পদক নিলামে তুলতে হয়েছিল মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী লিয়ন লেডারম্যানকে।

৯৬ বছর বয়সে রেক্সবার্গের আইডাহো শহরের একটি হাসপাতালে মারা গেলেন সেই নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী লিয়ন লেডারম্যান। পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন তিনি কিন্তু রেখে গেলেন হিগস-বোসন নিয়ে তার ব্যাখ্যা করা মহামূল্যবান তত্ত্ব। শেষ বয়সে দীর্ঘদিন ধরে ডিমেনশিয়ায় ভুগছিলেন প্রবীণ এ বিজ্ঞানী।

১৯২২ সালে নিউইয়র্ক শহরে জন্ম লেডারম্যানের। তার বাবার একটি ধোপাখানা ছিল। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া এ বিজ্ঞানী নিউইয়র্কের সিটি কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করেন। স্নাতক পাশের পরেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে অংশ নেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে পুনরায় পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৫১ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাব-অ্যাটমিক পার্টিকল নিয়ে শুরু করেন গবেষণা। ১৯৭৮-১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ফার্মিল্যাব এর ডিরেক্টর ছিলেন তিনি।

১৯৮৮ সালে ‘মিউয়ন নিউট্রিনো’ নামে একটি সাব-অ্যাটোমিক পার্টিকল আবিষ্কার করার জন্যই পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন লেডারম্যান। পরবর্তী সময়ে ডিমেনশিয়া ধরা পড়ার পর নিলামে তোলেন সেই নোবেলের সেই সোনার পদক। ৭ লাখ ৬৫ হাজার ডলারে সেটি বিক্রি করেন।

এ বিজ্ঞানীর ৩৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের সঙ্গী এলেন কার লেডারম্যান বলেন, ‘উনি মানুষকে ভালবাসতেন। চেষ্টা করতেন তাদের শেখাতে এবং বোঝাতে যে, কেন বিজ্ঞান নিয়ে এত চর্চা হচ্ছে।’

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল টার্নার বলেন, ‘শক্তি কী এবং কণাদের নিয়ে তার গবেষণা অনস্বীকার্য। তার থেকেও বড় কথা, সময়ের তুলনায় অনেক এগিয়ে ছিল লেডারম্যানের বিজ্ঞান চর্চা।’

২০১৫ সালে নিলামে পদক বিক্রির পরে লেডারম্যান-পতœী অবশ্য বলেছিলেন, ‘নোবেল সম্মান উনি ভোগ করেছেন। তার ইচ্ছে এবং বিজ্ঞানের প্রতি তার ভালবাসা, এ বার অন্য কারও কাছে সম্পদ হয়ে থাকুক।’