শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > সারাদেশ > পলাশে জমি নিয়ে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব > কবরস্থানে মূর্তি রেখে লাশ দাফনে বাধা

পলাশে জমি নিয়ে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব > কবরস্থানে মূর্তি রেখে লাশ দাফনে বাধা

শেয়ার করুন

পলাশ প্রতিনিধি ॥
নরসিংদী: পলাশে কবরস্থানের জমি নিয়ে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বের জেড়ে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে বাধা প্রয়োগ করেছে একটি সংখ্যালঘু পরিবার। সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা কবরস্থানে মূর্তি রেখে লাশ দাফনে বাধা প্রয়োগ করেন।
রবিবার রাতে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের গয়েষপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেড়ে ওই এলাকায় হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। এক পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
প্রতক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রবিবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে গয়েষপুর গ্রামের মসজিদের কবরস্থানে একই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর লাশ দাফন করতে গেলে প্রশেন জিত, ডলি রানী দাস, দুধু দাস ও বিপ্লব কুমারসহ কয়েকজন এসে তাদের জমি দাবি করে কবরস্থানে মূর্তি রেখে লাশ দাফন না করার জন্য বাধা প্রদান করে। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হিন্দু-মুসলিমদের হাতাহাতির সৃষ্টি হয়।
গয়েষপুর মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. মজিত মিয়া জানান, মসজিদদের কবরস্থানের জন্য কয়েক বছর আগে আবদুল রহমান এ সম্পত্তি দান করেন। এরপর থেকে এখানে গয়েষপুর গ্রামে বসবাসকৃত বাসিন্দারা মারা গেলে তাদের লাশ এ কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি আরো জানান, এ কবরস্থানে পূর্বেও গ্রামবাসীর লাশ দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডলি রানী দাস বলেন, আমাদের সম্পত্তি অন্য কেউ এসে কবর স্থানের নামে দিয়ে দিলেই হবে না কী। আমরা আমাদের সম্পত্তি রক্ষা করতে বাধা দিয়েছি। পরে রোমেল, আলতাফ, বাবুল, দেলোয়ার ও ইদ্রিস আলীসহ কয়েকজন আমাদের বাড়িতে তা-ব চালিয়ে ঘরের বিভিন্ন জিনিস ব্যাপক ভাংচুর চালানোসহ আমাদেরকে মারধোর করে। তাদের তা-বে বাধা দিতে গিয়ে কলেজ পড়–য়া আমার ছোট বোন রিতু গুরুতর আহত হয়েছে। তিনি আরো অভিযোগ করেন, আবদুল রহমান দীর্ঘদিন যাবত তাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক ভোগ করে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম মোস্তফা জানান, লাশ দাফনের বাধা দেওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এছাড়া হামলার ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিত্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি বলেন, কেউ মারা গেলে তার লাশ দাফন নিয়ে ঝঁগড়া খুবই দুঃখজনক। লাশ দাফনকে কেন্দ্র করে যেনো কোন রকম সংঘর্ষ না হয়, সে জন্য এ কবরস্থানেই তাদেরকে বুঝিয়ে লাশ দাফন করতে দেওয়া হয়েছে। তবে যেহেতু আদালতে এই সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলমান, তাই পরবর্তীতে আদালত থেকে রায় আসা পর্যন্ত এ কবরস্থানে আর কোনো লাশ দাফন না করতে নিষেধ করা হয়েছে।