বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ঢাকার দুই শিক্ষার্থী রাজিব-দিয়ার মৃত্যু ও চট্টগ্রামে পায়েলসহ তিন ছাত্রকে চাপা দিয়ে হত্যার পর দেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠলেও পরিবহন শ্রমিকরা এতটুকু বদলায়নি। তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিটি গেটের অদূরে কালিরহাট এলাকায় ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রেজাউল করিম রনি নামে এক যুবককে বাসের চাকার নিচে ফেলে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে রনিকে বাসের ভেতরেই কাঠের ব্রাশ দিয়ে পেটানো হয় বলেও জানা গেছে।
বাসের হেলপার মানিক ও তার অপর সহযোগীরা এতটাই হিংস হয়ে উঠেছিল যে, বাসযাত্রীদের প্রতিবাদকে তোয়াক্কা না করে ক্লান্ত রনিকে মুহূর্তে বাসের নিচে ছুড়ে ফেলে দেয়। তখনও ক্ষিপ্ত বাসচালক দিদারুল আলম রনির শরীরকে তার বাসের চাকায় দুমড়ে-মুচড়ে ৫০ ফুট টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়।
এ সময় বাসযাত্রীরা ‘লোকটা মরে গেল বুঝি’ বলে চিৎকার করতে থাকে এবং যাত্রীদের প্রতিরোধের মুখে চালক বাস থামিয়ে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পালিয়ে যায়। বাসের হেলপারও দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। ওই সময় বাসের মধ্যে তাদের আরও কয়েকজন সহযোগী ছিলেন। তারাও সুযোগ বুঝে গা ঢাকা দেয়।
ঘাতক বাসের চালক দিদারুল আলম (৩৫) ও হেলপার মানিকের (৩২) পরিচয় মিললেও এখনও তারা অধরা। লুসাই পরিবহনের এ বাসটির বৈধ কাগজপত্রও খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, ঢাকার দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় এতো কিছু হলো অথচ পরিবহন শ্রমিকদের গায়েই লাগছে না। তারা বিন্দুমাত্রও বদলায়নি। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে প্রতিদিন এমন হত্যাকাণ্ড ঘটতে থাকবে। এসব ঘটনায় ঘাতকদের কঠিন শাস্তির আওয়ায় আনতে হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৯ জুলাই দুপুরে হোটেল র্যাডিসনের সামনে জিল্লুর রহমান মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোডে সড়ক দুর্ঘটনায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ওই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় দেশ জুড়ে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছিল। বিশেষ করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ঢাকাকে প্রায় অচল করে করে দিয়েছিল শিক্ষাথীরা। পরবর্তীতে সরকারের আশ্বাসে রাস্তা ছেড়ে ঘরে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। সূত্র: আমাদেরসময়.কম