শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তদন্তে একরামুলের ন্যায়বিচার!

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তদন্তে একরামুলের ন্যায়বিচার!

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
মাদক নির্মূল অভিযানের নামে ২৬ মে কথিত বন্দুকযুদ্ধে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হাতে টেকনাফের কাউন্সিলর মো. একরামুল হক নিহত হন। তারপর থেকেই এই অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত বলা হচ্ছিল একরামুলের বিরুদ্ধে আগে থেকেই তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু একরামুল নিহতের কিছুদিন পর প্রায় ১৫ মিনিটের চারটি অডিও ক্লিপ সামনে আসে।

ডেইলি স্টারে প্রকাশিত ওই অডিও সারাদেশে ঝড় তুলেছে। তারপর তোপের মুখে পড়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পুরো ব্যাপারটাই ক্ষতিয়ে দেখবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রালয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছিলেন, এই ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একরামুলের হত্যা নিয়ে বিভিন্ন লেখক, ব্লগার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এনিয়ে ব্যাপক লেখালেখি হয়েছে। বলা হচ্ছিল, একরামুলকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। সে মাদকের সাথে যুক্ত ছিল না।

এবার একরামুল নিরাপরাধ থাকার সত্যতা ও ন্যায়বিচারের দাবি নিয়ে সামনে এসেছেন কক্সবাজার জেলা যুবলীগের দুজন শীর্ষ নেতা।

ডেইলি স্টারের তথ্য মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের সঙ্গে ধানমন্ডির বাসায় বৈঠক হয়েছে তাদের। সেখানে তারা বলেছে, মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত একরামুল হককে তারা গত ১২/১৩ বছর থেকে চেনেন। একরাম মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন কোনো আলামত তারা কখনই পাননি। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান।

বৈঠক শেষে কক্সবাজার যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমেদ বাহাদুর বলেছেন, একরাম নিজেই সচ্ছল ছিলেন না। তাকে কখনই মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে দেখা যায়নি। কক্সবাজার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হকও ২০ মিনিটের ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বাহাদুর বলেন, তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একরাম হত্যার সুবিচারের জন্যে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। একরাম দীর্ঘদিন টেকনাফে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই যুব সংগঠনটির নেতৃত্বে ছিলেন।

তিনি বলেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন ইতিমধ্যে ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তাদেরকে আশ্বস্ত দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এছাড়াও, যারা ‘মিথ্যা-বানোয়াট’ খবর প্রকাশ করে একরামকে ‘মাদক ব্যবসায়ী’ এবং ‘বিপুল সম্পদের অধিকারী’ হিসেবে দেখিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ওই যুবলীগ নেতারা।

অন্যদিকে, বিশিষ্টজনেরা মনে করছেন- একরামুলের হত্যা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সঠিক তদন্তের উপর নির্ভর করছে ন্যায়বিচার। যেন কোনভাবেই তদন্তে হেরফের না হয় সেদিকে নজর রাখতেও বলছেন তারা।

প্রসঙ্ত, গত ৩১ মে একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ‘ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে।’ সে সময় তিনি তার দাবির পক্ষে চারটি অডিও ক্লিপ উপস্থিত সাংবাদিকদের দেন।

এর আগে, ২৭ মে র‌্যাব দাবি করে, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একরাম নিহত হন।