আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার স্থান পরিদর্শনের অনুমতি পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। বুধবার তদন্তকারীরা যেসব স্থানে রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে সেখানে যেতে পারবেন বলে নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। রাসায়নিক হামলার ঘটনা তদন্তে শনিবারই সিরিয়ায় পৌঁছেছে অর্গ্যানাইজেশন অব কেমিক্যাল ওয়েপুনস (ওপিসিডব্লিউ)। কিন্তু সে সময় তাদের দৌমা পরিদর্শনের অনুমতি দেয়া হয়নি।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স সেখানে হামলা চালানোর কারণে তদন্ত কাজে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা শুরু হবে এবং তদন্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তদন্ত কাজকে অন্যদিকে প্রভাবিত করার জন্যই তারা জোট হয়ে হামলা চালিয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাশিয়া।
তবে সিরিয়া এবং তাদের মিত্র দেশ রাশিয়া বরাবরই দৌমায় রাসায়নিক হামলার কথা অস্বীকার করে আসছে। সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাসায়নিক হামলা চালানোর অভিযোগ এনে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে বলেই দাবি পশ্চিমা দেশগুলোর। কিন্তু এ বিষয়টি এখনও পরিস্কার নয় যে দৌমায় রাসায়নিক হামলার জন্য কারা দায়ী। অতিদ্রুত ওই এলাকায় তদন্ত চালিয়ে হামলার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করা উচিত।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দেশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উত্তরাঞ্চলীয় হোমস শহরে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করেছে।
সায়রাত বিমান ঘাঁটিতে হামলা আঘাত হেনেছে ওই মিসাইল। তবে কারা এটি নিক্ষেপ করেছে তা জানা যায়নি। অপর এক খবরে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ সংগঠন জানিয়েছে, রাজধানী দামেস্কের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দুমেইর সামরিক বিমানবন্দরে তিনটি মিসাইল প্রতিহত করেছে সিরীয় বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী।
পেন্টাগনের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, ওই স্থানে বর্তমানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর কোনো কার্যক্রম চলছে না। দৌমায় হামলার ১১তম দিনে বুধবার দৌমায় পৌঁছাবেন তদন্তকারীরা। তারা সেখান থেকে মাটি এবং অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করবেন। এসব জিনিস পরীক্ষার মাধ্যমেই তারা রাসায়নিক হামলার সঙ্গে জড়িত পক্ষদের চিহ্নিত করবেন।
ওপিসিডব্লিউ সংস্থায় নিয়োজিত মার্কিন দূত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, রাশিয়া হয়তো আগেই ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে যেন তদন্ত বাধাগ্রস্ত হয়। তারা হয়তো প্রমাণ নষ্টের চেষ্টা করেছে। তথ্যানুসন্ধান মিশন ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টায় সেখানে তারা কিছু করতে পারে বলে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন।
তবে দৌমায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি রাশিয়া সেখানে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি।
চলতি মাসের ৭ তারিখে পূর্ব ঘৌতার বিদ্রোহী অধ্যুষিত দৌমা এলাকায় রাসায়নিক হামলায় প্রায় ৭০ জন নিহত হয়। অসুস্থ হয় আরও পাঁচশতাধিক মানুষ। ওই হামলার জন্য রাশিয়া এবং সিরিয়াকে দায়ী করে শনিবার সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পশ্চিমা দেশগুলো। তবে এসব হামলাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি রাশিয়া। তারাও পাল্টা জবাব দেবে বলে পশ্চিমা দেশগুলোকে হুমকি দিয়েছে।