শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > গাজীপুরে পুলিশকে জিম্মি করে অর্থ আদায়, প্রতারক চক্রের সাত সদস্য আটক

গাজীপুরে পুলিশকে জিম্মি করে অর্থ আদায়, প্রতারক চক্রের সাত সদস্য আটক

শেয়ার করুন

গাজীপুর : গাজীপুরে এক পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করে অর্থ আদায় এবং সাধারণ মানুষকে আটক করে নানাভাবে ভয়ভিতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে দুই নারীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে জয়দেবপুর থানার পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার বাড়াইপাড়া এলাকার সোলেমান গণির ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৪), শেরপুর সদরের সন্নাসীচর এলাকার ইসমাইল আলীর ছেলে মো. আইয়ুব আলী (২৮), জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার ঢালুয়া বাড়ি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মো. এরশাদ আলী (২৮), একই থানার ঝাউপাড়া টোক্কারচর গ্রামের মাসুদ রানার স্ত্রী রতœা বেগম (৪৫), টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি থানার বলিভদ্র গ্রামের মো. শাহজাহান আলীর ছেলে মাসুদ রানা (৩০), বরিশালের গৌরনদী থানার হোসনাবাদ গ্রামের মো. শাহ আলম সরকারের ছেলে মো. শামীম হোসেন (৪৫) ও গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার বোনারপাড়া গ্রামের হামিদুলের মেয়ে রূপা বেগম (২০)।


আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, গ্রেতারকৃত ও তার সহযোগীরা টঙ্গী, চান্দনা চৌরাস্তা ও কোনাবাড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তা থেকে সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ টাকা পয়সা ও মোবাইল সেটসহ মূল্যবান জিনিষপত্র লুট করতো এবং খালি ষ্ট্যাম্পে ও জোর করে চেকে স্বাক্ষর রাখতো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যাত্রীরা চান্দনা চৌরাস্তা, কোনাবাড়ি ও টঙ্গী এলাকায় বাস থেকে নামলে কৌশলে যাত্রীদের জিম্মি করে তাদের ভাড়া বাসায় নিয়ে আটকিয়ে ফেলতো। পরে তারা ভিকটিমের বাড়িতে ফোন দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে পরে ছেড়ে দিত। জয়দেবপুর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, গাজীপুর পুলিশ লাইনসের রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) সদস্য মো. আমীর হোসেন বুধবার দুপুরে তাঁর পূর্ব পরিচিত মোসা. শ্যামলার সঙ্গে চান্দনা চৌরাস্তা সংলগ্ন বর্ষ সিনেমা হলের সামনে দেখা হয়। কথা আছে বলে তাকে চান্দনা চৌরাস্তা সংলগ্ন ভোগড়া এলাকার কাজিমুদ্দিন স্কুল সড়কের শাহ আলমের বাড়ির তৃতীয় তলায় একটি রুমে নিয়ে যায়। সেখানে রুপার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে ভাড়াটিয়া পরিচয়ে সোহেল ও অপর এক ব্যক্তি ওই রুমে প্রবেশ করে। এর কিছুক্ষণ পর সাংবাদিক পরিচয়ে জাহাঙ্গীর আলম ৫-৬জন লোক নিয়ে ওই রুমে প্রবেশ করে। এসময় জাহাঙ্গীর রুপার সঙ্গে তার ছবি তুলে। এক পর্যায়ে তারা তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবে এবং খুন জখমের ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে কয়েকটি খালি ষ্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয় এবং আরো ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। তাকে ২০ মিনিট সময় দিয়ে কয়েকটি বিকাশ নম্বর দেয়। পরে মো. আমীর হোসেন কৌশলে তার মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে পূর্ব পরিচিত জাকির নামের একজনকে দুটি বিকাশ নম্বর পাঠায়। পরে জাকির পুলিশের সহায়তা নিয়ে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করে। অভিযানকালে আটককৃতদের কাছ থেকে ৮টি মোবাইল সেট, একটি ল্যান্স ক্যামেরা, সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনের কয়েকটি আইডি কার্ড, ১০টি বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল সিমকার্ড, তিনটি খালি চেক, ১০টি লিখিত অলিখিত স্ট্যাম্প ও ছিনতাইকৃত পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানায় মামলা হয়েছে।