আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
চলতি বছরের গত ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর চরম নির্যাতনের মুখে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে। ইয়াঙ্গুনে এ বৈঠককে কেন্দ্র করে বড় ধরনের আশা ব্যক্ত করছে উভয় দেশ। কারণ, ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠককে দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া প্রক্রিয়া নিয়ে একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হতে পারে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক। এ বৈঠকে আরো যোগ দিয়েছেন ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত এম শফিউর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী অফিসের কর্মকর্তারা।
এ বৈঠকের আগে সকাল বেলা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, তিনি বৈঠকের ফল সম্পর্কে তিনি আশাবাদী।
মধ্যাহ্নভোজের পর মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির অফিস সংক্রান্ত মন্ত্রী কাইওয়া তিন্ট শয়ে’র সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে বসার কথা রয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম মাহমুদ আলীর।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) তিনি দু’দিনের এ সফরে চূড়ান্ত দফায় বৈঠক করবেন অং সান সু চির সঙ্গে। এ বৈঠকটি হবে মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানীতে।
জানা যায়, প্রাথমিকভাবে এ বৈঠকে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের দিকে দৃষ্টি দেয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়া নিয়ে পরিস্কার ভাবে বিভিন্ন ধারা, শর্ত নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বহুল প্রত্যাশিত এ বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানতে চেষ্টা করছে বৈঠকের ফল কি, কিভাবে দ্রুততার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে ফেরত পাঠানো যায়। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্পন্ন হওয়ার একটি সময়সীমা চাইতে পারে।
সিনিয়র একজন কর্তকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, যদি বৈঠকে সবকিছু ঠিকঠাক মতো ভালোয় ভালোয় হয় তাহলে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দু’পক্ষ একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর করতে পারে।
এক্ষেত্রে অবশ্য দু’পক্ষই বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবধান কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের যাচাই প্রক্রিয়া। এতে জাতিসংঘকে চায় বাংলাদেশ। তবে এখনও বিষয়টি মিয়ানমার মেনে নেবে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
আন্তর্জাতিক কড়া চাপের মুখে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি গত মঙ্গলবার বলেছেন, এ সপ্তাহেই বাংলাদেশের সঙ্গে সমাঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।
