শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > কমেছে পানি, বেড়েছে দুর্ভোগ

কমেছে পানি, বেড়েছে দুর্ভোগ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
সারা দেশে বন্যার্ত এলাকায় পানি কমতে শুরু করলেও চরম দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসি মানুষের। থাকা খাওয়ার কষ্টসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়েছেন বানভাসিরা। অনেক এলাকার দেখা দিয়েছে রোগব্যাধি। চিকিৎসা-সেবা ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে জ্বর সর্দি, আমাশয়, ডায়রিয়া, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ।

বিশেষ করে বন্যা কবলিত এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙ্গে, ধ্বসে ও ক্ষয়ে যাওয়া অসংখ্য খানাখন্দ এবং গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অনেক এলাকার রাস্তার ব্রিজ ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বন্যায় ভাঙা বাড়িঘর নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা। পানি কমলেও অনেকের বাড়িতে এখনও জমে রয়েছে কাদা ও জমে থাকা পানি। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা।

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বন্যার্তদের একজন বলেন, বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি সব ভেঙে গেছে। টয়লেট বাথরুম সব নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো ঠিক করতে অনেক সময় লাগবে।

বন্যায় কোনো প্রকার কাজ কর্ম না থাকায় চরাঞ্চলের দিনমজুর বানভাসিরা এখন বেকার। এসব দিন মজুরদের ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছে। চিন্তায় অনেকে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে হা-হুতাস করতে দেখা গেছে।

প্রথম দফা বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় দফার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জামালপুরের শতশত গ্রাম। দুই সপ্তাহের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১ হাজার কিলোমিটারের বেশি কাঁচা-পাকা সড়ক, ৪৪টি ব্রিজ কালভার্ট। নষ্ট হয়েছে প্রায় ৩৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে বাড়ি ফিরলেও সামনের দিনগুলো কিভাবে কাটবে তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ক্ষতিগ্রস্তরা। জামালপুরের একজন বলেন, আমার সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে, পরনেরও কিছু নাই, খাবারও নাই।

পানি কমলেও নানা সংকটে দিন কাটছে নিলফামারির কয়েকলাখ মানুষের। বেসরকারি হিসেবে জেলায় কৃষি ও মৎস খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। নষ্ট হয়েছে ১৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল ও সবজির ক্ষেত। এছাড়া ২৫ হাজার পুকুরে ৩ হাজার ৮৫৩ মেট্রিকটন মাছ ভেসে গেছে। একজন কৃষক বলেন, এবার আমাদের ফসল ভালো হয়েছিল, কিন্তু বন্যার কারণে সব নষ্ট হয়ে গেছে।

বন্যায় নওগায় প্রায় চার লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য ত্রাণ পাওয়ার অভিযোগ তাদের। ঠাকুরগাঁয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪০ ইউনিয়নের ২০০ গ্রামের কয়েক হাজার বাড়িঘর। একদিকে নিজেদের খাবারের সংকট অন্যদিকে গবাদি পশুর খাবার নিয়ে বিপাকে পরেছেন বন্যার্তরা।

বন্যার কারণে বিলীন হয়ে গেছে বানভাসিদের কোরবানির ঈদের আমেজ। তবে আবহাওয়া এ অবস্থায় থাকলে বানভাসি পরিবারগুলো কষ্ট করে হলেও বাড়িতে ঈদ করতে পারবেন বলে আশা করেছেন তারা। আমাদের সময়.কম