স্টাফ রিপোর্টার ॥
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে এর আগে দেওয়া রুলের শুনানিতে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
রিটকারীপক্ষে এদিন আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন।
আইন সচিবের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, শ ম রেজাউল করিম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
আদেশের পর জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, “ওই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আইন অনুযায়ী বা যথাযথ হয়নি। তার নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আমরা রিট করেছিলাম। ৮ অগাস্ট প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়েছিল। আজ রুলের শুনানিতে তিন মাসের জন্য নিয়োগ স্থগিত করে দিয়েছে।”
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের দায়িত্ব পাওয়া জহিরুল হকের ৭ অগাস্ট অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা থাকলেও তার আগের দিন তাকে একই পদে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ দেয় সরকার।
তার ওই নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ-উজ জামান।
তার যুক্তি ছিল, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ লাগে। কিন্তু এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
এছাড়া আইন সচিব পদে জুডিশিয়াল সার্ভিসের বাইরের কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া যায় না। আইন সচিব যেহেতু অবসরের বয়সে চলে গেছেন, সেহেতু তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসে নেই। তাছাড়া আপিল বিভাগের এক রায় অনুযায়ী ওই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগেরও কোনো সুযোগ নেই বলে যুক্তি দেওয়া হয় রিটে।
ওই রিটের ওপর শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ গত ৮ অগাস্ট রুল জারি করে।
আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তার যোগদানপত্র গ্রহণের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (প্রশাসন-১) রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ ওই রুলের জবাব দেওয়ার জন্য দুই দফা সময় নেওয়ার পর মঙ্গলবার আবারও সময়ের আবেদন করলে আদালত নতুন করে সময় না দিয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ওই আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়।