শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ৭২ ঘন্টা ধরে অচল পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ

৭২ ঘন্টা ধরে অচল পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ

শেয়ার করুন

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ গত এক সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় বন্ধ হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল। নাব্যতা সংকটের কোন উন্নতি না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ গত প্রায় ৭২ ঘণ্টা ধরে ওই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নাব্যতা সংকট ভয়াবহ আকার ধারন করার পাশাপশি নদীতে রয়েছে তীব্র স্রোত। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে চ্যানেল থেকে পলি অপসারন করার সঙ্গে সঙ্গেই আবার তা ভরে যাচ্ছে। ড্রেজিং করে নদীর মাটি নদীতে ফেলার কারণে নাব্যতা নিরসনে কোন উন্নতি হচ্ছে না। একারণে এখন ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই ডুবোচরে আটকে পড়ছে কোন না কোন ফেরি। তার মধ্যে তিন দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে দুর পাল্লার যাত্রবাহী বাস পারাপার। সব মিলিয়ে অচল হয়ে পড়েছে দেশির দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গের অন্যতম যোগাযোগ ব্যবস্থা।
কবে নাগাদ এই ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পন্ন হবে আর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে তা ষ্পষ্ট করে কেউ বলতে পারছে না। ৭২ ঘন্টার মধ্যে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কথা কর্তৃপক্ষ জানালেও সে সময়সীমা পার হয়ে গেছে। ৫টি ড্রেজার দিয়ে চ্যানেলে ভেতর জমে থাকা মাটি খননেন কাজ চললেও এখানও চ্যানেল স্বাভাবিক হযনি। তীব্র স্রোতের কারণে ড্রেজিং কাজ ব্যহত হচ্ছে বলে ডেজিং ইউনিটের কর্তব্যাক্তিরা জানান। এ অবস্থায় পরিক্ষামুলক ভাবে একেকটি ফেরিতে ৫-৬টি যানবাহন দিয়ে ছাড়া হলেও তা ডুবোচড়ে গিয়ে আটকে পড়ছে। অথচ একটি রো রো ফেরিতে কম পক্ষে ২৫টি ভারী যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। নাব্যতা ভয়াবহ আকার ধারন করায় খালি ফেরিই ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত সপ্তাহ খানেক আগে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার কাছাকাছি ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। আর এই ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ার কারণ হিসেবে বিআইডাব্লিইটিএ মনে করছে সম্প্রতি দৌলতদিয়া প্রান্তের তিন গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হয়ে পড়ায় সেই ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মাটি এসে নৌ চ্যানেল ঢেকে ফেলেছে। যার ফলে ঐ চ্যানেলে ডুবোচরের সৃষ্টি হওয়ায় ফেরি গুলো চলাচল করতে গিয়ে মাটিতে ঠেকে যাচ্ছে।
বিআইডাব্লিউটিএ এর বিশ্লেষকদের মতে আরও দুটি কারণে ফেরি চলাচল ব্যহত হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হলো দৌলতদিয়া পয়েন্টে নদীতে প্রবোল স্রোত। আর এই স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফেরিগুলো চলাচল করতে হীমসিম খাচ্ছে। গত শুক্রবার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট পরির্দশনে এসে বিআইডবিব্লটিএ এর চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খোন্দকার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বর্ষা মওসুমে সাধারণত নদীতে নাব্যতা বেশি থাকে। দৌলতদিয়া উত্তরপাড়ার তিনটি গ্রাম নদী ভাঙনের কবলে পড়ায় পলি নৌরুটে এসে পড়ছে। তিনি ৭২ ঘন্টার মধ্যে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করতে বর্তমান নৌ-চ্যানেল সচল করাসহ আরও একটি নতুন নৌ-চ্যানেল করা হবে। তবে আল্টিমেটাম শেষ হলেও পরিস্থির কোন উন্নতি হয়নি।
এদিকে গত শনিবার রাতে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী ফেরি পারাপারের বাসগুলো পাটুরিয়া রুট পরিহার করে বিকল্প যমুনা সেতু কিংবা মাওয়াঘাট হয়ে চলাচল করার নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশনার পর শনিবার সকাল থেকে পাটুরিয়াঘাটে দূরপাল্লার বাস আসছে না । আজও সেই নির্দেশ বহাল রয়েছে। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় নৌপরিবহনমন্ত্রী এম শাহজাহান খান পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌচ্যানেল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট সচল করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ৫টি ড্রেজার দিয়ে খননের কাজ শুরু হয়েছে। আর প্রবল স্রোতের মধ্যেও ড্রেজার ধরে রাখার জন্য শক্তিশালী টাগ জাহাজ (উদ্ধারকারী জাহাজ) স্থাপন করা হয়েছে। শীঘ্রই ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানির গভীরতা বাড়িয়ে নাব্যতা রক্ষা করা হবে।