বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
‘মোরা’র আঘাত শুরু হওয়ার সাথে সাথে বাড়ছে বাতাসের গতিবেগ। প্রচণ্ড বাতাসে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে দেশের সর্ব দক্ষিণের সেন্টমার্টিন, শাহাপরীরদ্বীপসহ টেকনাফের অধিকাংশ এলাকা। ভেঙে যাচ্ছে অধিকাংশ কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি।
মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন সমুদ্র উপকূলে আঘাত হেনেছে। ঝড়ে সেন্টমার্টিনে দুই শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় একজন ইউপি সদস্য জানিয়েছেন। এসব এলাকায় প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। সঙ্গে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে, ১১০ থেকে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে বান্দরবানে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে লন্ডভন্ড হতে শুরু করেছে বান্দরবানের ৭টি উপজেলা।
মঙ্গলবার ভোর ৫টার পর থেকে লামায় শুরু হয় দমকা হাওয়া এবং সেই সাথে রয়েছে বৃষ্টিপাত। ‘মোরা’র আঘাত শুরু হওয়ার সাথে সাথে বাড়ছে বাতাসের গতিবেগ। প্রচণ্ড বাতাসে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি।
ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে দমকা বাতাসে উপড়ে যাচ্ছে গাছপালা। অনেক জায়গায় ধসে পড়েছে পাহাড়।নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যাচ্ছে অসহায় মানুষ। তবে এখনো পর্যন্ত কোন প্রাণহানীর খবর পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, ভোর ৪টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন এলাকা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এসব এলাকায় এখন বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। তিনি আরো বলেন, ১৯৯১ ও ১৯৯৪ সালে আঘাত হানা ঝড়ের চেয়ে এবারের ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ কিছুটা বেশি বলে স্থানীয় লোকজন তাঁদের জানাচ্ছেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান খান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভোর চারটার পর থেকে সেন্টমার্টিন লন্ডভন্ড হতে শুরু করে। ছয়টা নাগাদ সেন্টমার্টিনের দুই শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কাঁচা ঘর বেশি। আধাপাকা ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ ঘরের চালা উড়ে গেছে। এ ছাড়া বহু গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্র ও হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা সবাই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এর আগে তাঁরা কখনো এমন ভয়াবহ ঝড় দেখেননি।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিমড়বাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বিশেষ বার্তায়।