শুক্রবার , ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ , ১২ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > ছাঁকনি দিয়ে বিশুদ্ধ করা যাবে লবণাক্ত পানি

ছাঁকনি দিয়ে বিশুদ্ধ করা যাবে লবণাক্ত পানি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একদল বিজ্ঞানী এমন একটি ছাঁকনি তৈরি করেছেন যা দিয়ে সমুদ্রের পানি থেকে লবণ আলাদা করে ফেলা সম্ভব। গ্রাফিন দিয়ে তৈরি এই ছাঁকনি ব্যবহার করে সমুদ্রের লবণাক্ত পানিকে মিষ্টি পানিতে পরিণত করা যাবে। বলা হচ্ছে বিজ্ঞানের এই আবিষ্কার একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা কারণ এই ছাঁকনিটি সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের পরিষ্কার খাবার পানির সংকট দূর করতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।

ধারণা করা হয় পৃথিবীতে ৭০ কোটিরমত মানুষের কাছে পান করার মত নিরাপদ পানি নেই। জাতিসংঘ বলছে ২০২৫ সালের মধ্যে এই মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১শ’ ২০ কোটিতে।

এই গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী একজন বিজ্ঞানী রাহুল নায়ার। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে যে কোটি কোটি মানুষের কাছে খাবার পানি নেই, এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে তাদের কাছে সুপেয় পানি পৌঁছে দেয়ার এক সম্ভবনা তৈরি হল। আমরা আশ্বস্ত করতে পারি আর কয়েক বছরের মধ্যেই এটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে’।

ম্যানচেষ্টার ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এই ছাকনিটি আবিষ্কার করেছেন। তাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন বিজ্ঞানী ধিঃবৎ ঢ় ১ড. রাহুল নায়ার। তিনি দেখিয়েছেন অন্য একটি রাসায়নিক পদার্থ থেকে তৈরি গ্রাফিন অক্সাইড ব্যবহার করে তারা সমুদ্রের পানি থেকে লবণকে আলাদা করতে সফল হয়েছে।

কিন্তু কিভাবে কাজ করে এই ছাকনিটি?

এই বিষয়ে বিবিসির বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদাতা পল্লব ঘোষ বলেন, ‘অন্যসব ছাঁকনির মতই এই ছাকনি। গ্রাফিনের তৈরি এই ছাকনিটিতে আছে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ছিদ্র। যা দিয়ে পানি বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু তার গায়ে লবণ আটকে থাকে’।

বিজ্ঞানীদের এই দলটি ২০০৪ সালে প্রথম গ্রাফিনকে আলাদা করতে সক্ষম হন। এই গ্রাফিনে আছে কার্বনেটোমের একটি স্তর। এবং এগুলো সাজানো আছে স্বরভূজের আকৃতিতে। এর আছে অস্বাভাবিক কিছু বৈশিষ্ট। যেমন প্রসারিত করা যায় এরকম শক্তি এবং এটি বিদ্যুৎ পরিবাহি। বলা হচ্ছে এটি অলৌকিক এক বস্তু এবং ভবিষ্যতের পৃথিবীতে এই গ্রাফিন হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

পল্লব ঘোষ আরও বলেন, গ্রাফিনের উপর গবেষণায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে ম্যানচেষ্টারে ন্যাশনাল গ্রাফীন ইনস্টিটিউট। এখানেই প্রথম এই উপাদানটিকে আলাদা করা হয়েছিল। এটিকে ব্যবহার করে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এখানকার বিজ্ঞানীরা নোবেল পুরস্কার  পেয়েছিলেন ২০১০ সালে। তারা এখন এই গবেষনায় আরও বড় ধরনের অগ্রগতি ঘটালেন। আগে এর একটি সমস্যা ছিল। ঠিকমত কাজ করত না গ্রাফিনের এই ছাকনি। কারণ একটা সময় এসে গ্রাফিন দুর্বল হয়ে এর গায়ের ছিদ্রগুলো বড় হয়ে যেত।  কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন এর গায়ে কিছু রাসায়নিক মেখে দিয়েছেন তারফলে ছিদ্রগুলি বড় হতে পারে না।

সূত্র: বিবিসি বাংলা