শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > আন্তর্জাতিক > সিরিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ‘অনুষঙ্গ’ ছিল রাসায়নিক বোমা হামলা!

সিরিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ‘অনুষঙ্গ’ ছিল রাসায়নিক বোমা হামলা!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
লেবানন ও সিরিয়ার বিভিন্ন সূত্র বলছে রাসায়নিক বোমা হামলার জন্যে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে দায়ী করে আল-শায়রাত বিমান ঘাঁটিতে যে ৫৯টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তার সঙ্গে আরো অনুষঙ্গ ছিল। এই অনুষঙ্গ হিসেবে মার্কিন সেনাসহ আগেভাগেই ২০টি সাঁজোয়া যান জর্ডান সীমান্ত নিয়ে সিরিয়ায় ঢুকে পড়ে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সহায়ক ভূমিকা হিসেবে এসব সাঁজোয়া যান নিয়ে মার্কিন সেনারা জর্ডান সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছিল বলে দাবি করছে সূত্রগুলো।

একজন স্বাধীন সাংবাদিক হিসেবে সারাহ আবদাল্লাহ তার প্রতিবেদনে বলছেন, ২০টি সাঁজোয়া যান নিয়ে মার্কিন সেনারা জর্ডান সীমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় ঢুকে পড়ে । সিরিয়ার সার্বিক পরিস্থিতিতে এটা এখনো পরিস্কার নয় এসব সাঁজোয় যান নিয়ে তাদের সিরিয়ায় প্রবেশের উদ্দেশ্য কি ছিল? সারাহ আবদাল্লাহ লেবাননে সাংবাদিকতা করেন।

কোনো কোনো সূত্র বলছে, এসব মার্কিন সাঁজোয়া যানগুলো সিরিয়ায় অবৈধ বহিরাক্রমণেরই অংশ হিসেবেই ঢুকে পড়ে। কিন্তু সিরিয়া সরকার ও আইএস জঙ্গিদের মধ্যে রাসায়নিক বোমা ব্যবহার নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে এমন এক পরিস্থিতিতে মার্কিন সাঁজোয়া যানগুলোর জর্ডান সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়াকে অত্যন্ত বিপদজনক হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, আইএস জঙ্গিদের রাসায়নিক বোমা মজুদের ওপর শায়রাত বিমান ঘাঁটি থেকে বিমান হামলা করা হয়। অতীতে এধরনের রাসায়নিক বোমা মার্কিনিদের হাত হয়ে ইরাকের সাদ্দাম হোসেনের কাছে পৌঁছে যাওয়ার পর ইরানে তা ব্যবহার করা হয়েছিল।

আইএস জঙ্গি দমন কৌশল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র,রাশিয়া ও সিরিয়ার মধ্যে যে দ্বন্দ্ব রয়েছে তেমন এক পরিস্থিতিতে আশঙ্কা বা সম্ভাবনা থেকে যায় মার্কিন সাঁজোয় যানগুলো টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অংশ হিসেবে কাজ করেছে কি না। সিরিয়া সরকার বা কারা রাসায়নিক বোমা ব্যবহার করছে এ নিয়ে বিস্তর মতভেদ থাকার পাশাপাশি মার্কিন সাঁজোয়া যানগুলোর ঢুকে পড়া আরো বেশি সামরিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছে। কারণ এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি কেন সাঁজোয়া যানগুলো মার্কিন সেনা সহ কি ধরনের বস্তু নিয়ে জর্ডান সীমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় ঢুকে পড়ে। ইতিমধ্যে একটি সুইডিশ মিডিয়া দাবি করছে যে রাসায়নিক বোমায় সিরিয়ায় যে ১৭টি শিশুকে হত্যার কথা বলা হচ্ছে তাদের দেহে উচ্চ মাত্রার মাদক প্রবেশ করিয়ে মেরেছে একটি সাহায্য সংস্থার কর্মীরা। এ ব্যাপারে ইরান একটি স্বাধীন ও আন্তর্জাতিক তদন্ত করার যে দাবি তুলেছে তাতে কোনো পক্ষ সাড়া দিচ্ছে না।

সিরিয়া-জর্ডান সীমান্ত দক্ষিণ সিরিয়ায় অবস্থিত। সন্ত্রাসীদের দীর্ঘদিন সমর্থন দিয়ে আসছে জর্ডান, টেলিভিশনে ব্যাপক প্রচারিত এমন অভিযোগ থাকলেও সৌদি আরব্,ইসরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, কাতার যে আইএস জঙ্গিদের পেছনে সিরিয়ার সরকার পতনে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে অব্যাহত সাহায্য দিচ্ছে তা খুব কম প্রচার পেয়ে থাকে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি জর্ডান সীমান্ত দিয়ে ২০ মার্কিন সাঁজোয়া যানের ঢুকে পড়া ও সিরিয়ার সাধারণ মানুষের ওপর রাসায়নিক বোমা হামলা, সিরিয়ার সরকার পতনের প্রয়োজনে আইএস জঙ্গিদের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা একই সূত্রে গাঁথা কি না এমন ধরনের প্রশ্ন সন্দেহজনকভাবেই ঘুরপাক খাচ্ছে। সিরিয়া সরকার বেসামরিক মানুষের ওপর রাসায়নিক বোমা ব্যবহার করেছে এখন পর্যন্ত তার কোনো প্রমাণ মেলেনি।

এটা নিশ্চিত যে সিরিয়ায় এধরনের বহিরাক্রমণ আরেক বিপদজনক মাত্রা যোগ করবে ও সিরিয়া ঘিরে দ্বন্দ্ব আরো বৃদ্ধির পাশাপাশি সংঘাত আরো দানা বেঁধে উঠতে পারে যা থেকে পুরো বিশ্ব রেহাই নাও পেতে পারে। এ্যাক্টিভ পোস্ট থেকে নেওয়া