শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ৪২ বছর পর খুলনা-কলকাতা রেল

৪২ বছর পর খুলনা-কলকাতা রেল

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: চলতি শীত মৌসুমেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ট্রেনে চড়ে কলকাতা বা ভারতের যেকোনো প্রান্তে ভ্রমণে যেতে পারবেন। যে ব্যবস্থাটি ছিল ৪২ বছর আগে। এজন্য আর মাত্র এক মাস ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

যদিও চলতি জানুয়ারি মাসেই খুলনা-কলকাতা যাত্রীবাহী মৈত্রী-২ ট্রেন চলাচলের কথা ছিল। কিন্তু ভারত চাইছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এটি চালু করতে।

শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যৌথভাবে নতুন এ রেলরুটটির উদ্বোধন করবেন- এমনটিই প্রত্যাশা প্রতিবেশী দেশটির।

যেমনটি হয়েছিল গত বছরের জুনে নরেন্দ্র মোদী ঢাকা সফরে এলে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী কলকাতা-ঢাকা-আসাম এবং কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করে পিপল টু পিপল কানেকটিভিটি বাড়িয়েছেন।

আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে (১৬ ফেব্রুয়ারি)  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক-এডিজি (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান সোমবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, ‘দুই দেশই দ্রুততার সঙ্গে সকল প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে। খুলনা-কলকাতা মৈত্রী-২ এক্সপ্রেসটি হবে সাত থেকে ১০ বগির। আমাদের বগি স্বল্পতার কারণে পুরো রেকটিই ভারতীয় রেলওয়ে সরবরাহ করবে’।

হাবিবুর রহমান জানান, ভারত নিরাপত্তা বাড়াতে তাদের প্রান্তিক সীমান্ত হরিদাসপুর রেলস্টেশনের পুরো অংশটি কাটাতার দিয়ে ঘেরার কাজ করছে। যেমনটি রয়েছে দর্শনার বিপরীতে গেদে রেলস্টেশনে।

কলকাতা স্টেশন থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁওয়ের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে খুলনা পর্যন্ত যাতায়াত করবে মৈত্রী-২ এক্সপ্রেস। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উপযুক্ত করে তুলতে যাবতীয় গ্রাউন্ড পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে।

এ রুট দিয়ে ১৮ বছর আগে থেকে দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করছে।

গত বছরের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের যৌথ ঘোষণাপত্রেও এ নতুন মৈত্রী এক্সপ্রেসের বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল। কলকাতা-খুলনা ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে তিন ঘণ্টা সময় লাগবে। কিন্তু উভয় দেশের সীমান্তে ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সারতে দু’ঘণ্টা সময় ব্যয় হবে।

তবে ৪২ বছর আগে কলকাতা-খুলনা রেল যাত্রীদের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সম্পন্ন করা হতো রেলের মধ্যেই। এটি অনুপস্থিত ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসে। তখন বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশাল বিভাগের মানুষ স্টিমারের টিকিটের সঙ্গে রেলেরও টিকিট কিনে খুলনা এসে ট্রেনে চড়ে কলকাতায় যেতেন। এ রেল যোগাযোগের পরিকাঠামো প্রায় ১০০ বছর আগের।

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে কলকাতা-খুলনা রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৯৯ সালের শেষার্ধ্বে খুলনা ও কলকাতার মধ্যে রেলে পণ্য পরিবহন চুক্তি হয়। ওই বছর রেলে ট্রায়াল পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা দেখতে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং ভারতের রেলমন্ত্রী (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী) মমতা বন্দোপাধ্যায়।

গত বছরের ২৫ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত দুই দেশের রেলওয়ের কর্মকর্তারা দিল্লিতে খুলনা-কলকাতা মৈত্রী ট্রেন চালু নিয়ে আলোচনা করেন। অবশ্য ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী আশাতীত লাভের মুখ দেখায় দু’পক্ষকে পুরনো রুটটি চালু করতে উদ্বুদ্ধ করে।

যানজট ও বাসের অত্যধিক ভাড়ার কারণে ইদানিং ফরিদপুর, বরিশাল অঞ্চল, খুলনা এমনকি যশোরের মানুষও ট্রেনে চড়ে বেনাপোলে নেমে কলকাতাসহ ভারতের অন্যান্য স্থানে যাচ্ছেন। হরিদাসপুর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে বনগাঁও রেলস্টেশন। দুই দেশের অধিকাংশ যাত্রী কলকাতা যেতে বনগাঁও থেকে ট্রেনে চাপেন। ট্রেনের ভাড়া ২০ রুপি।

বাসে চার ঘণ্টার আগে কলকাতা পৌঁছানো যায় না। সেখানে ট্রেনে দু’ঘণ্টার কম সময়ে কলকাতা যাওয়া যায়।ে