শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > শামীম ওসমানের ভূমিকা নিয়ে দুই দলেই উৎকণ্ঠা

শামীম ওসমানের ভূমিকা নিয়ে দুই দলেই উৎকণ্ঠা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শুরু থেকেই আলোচনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। সেলিনা হায়াৎ আইভীকে দলের মনোনয়ন না দেওয়া, মনোনয়নসংক্রান্ত বিরোধ কেন্দ্র পর্যন্ত গড়ানো, আইভীকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া ও পরে তাকে ‘ছোট বোন’ বলে সম্বোধন করে তার পক্ষে কাজ করার ঘোষণা এসব নিয়ে তিনি ছিলেন আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে। তবে আইভীকে সমর্থন দিলেও তাকে নিয়ে আশঙ্কা দূর হচ্ছে না।

স্থানীয়দের ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন মূলত এ দুটি বিষয় নিয়েই শহরময় চলছে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা।  শামীম ওসমানের অনুগতদের কারণে বদলে যেতে পারে ভোটের সমীকরণ। কারণ, শামীম ওসমানের অনুগামী কাউন্সিলর প্রার্থীদের কেউ কেউ যদি কেন্দ্র দখল কিংবা এ ধরনের বিশৃঙ্খলা করে বৈতরণী পার হতে চান সে ক্ষেত্রে ওই কাউন্সিলর প্রার্থীর পাশাপাশি তারা মেয়র পদে কাকে সিল মারবে সেটাও চিন্তার বিষয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভোটাররা এই বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন যে কোনো মূল্যে অন্তত কেন্দ্রে যেতে। তবে সেক্ষেত্রে তারা মূলত আওয়ামী লীগের লোকজনের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করবেন। কারণ, যদি আওয়ামী লীগের লোকজন কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি না করে সেক্ষেত্রে অবাধে কেন্দ্রে বিএনপির কর্মী ও ভোটাররা গেলে ভোটের হিসাব পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিএনপির নেতারাও বলেছেন তারা সকালে এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই স্পষ্ট ধারণা পাবেন কেমন ভোট হবে।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, শামীম ওসমান যেভাবে বলছেন নৌকার জয় ঘটবে সেখানে হয়তো নৌকাকে পার করার পাশাপাশি অনুগামী কাউন্সিলরদের বৈতরণী পার করাতেও নেওয়া হতে পারে নানা পদক্ষেপ। যদিও আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী সবশেষ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, শামীম ওসমান পজেটিভ আছেন। অন্যদিকে প্রশাসন বলছে, কাউকেই কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না।

এদিকে শামীম ওসমান অনুগামী ও সমর্থিত অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয়ী করাতে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন জানান, ইতোমধ্যে সবগুলো ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একজন করে কাউন্সিলরকে জয়ী করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া শামীম ওসমানও চাচ্ছেন যে কোনো মূল্যে তাদের নিজস্ব কাউন্সিলরা যেন অন্তত বৈতরণী পার হয়। সে কারণে প্রতিপক্ষের উপর ইতোমধ্যে চাপ প্রয়োগও করা হচ্ছে কৌশলে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মূলত বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকা নিয়ে গঠিত। এ তিনটি এলাকার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে যুক্ত যার এমপি শামীম ওসমান। সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ। যেহেতু সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাটি শামীম ওসমানের নির্বাচনি এলাকা সেহেতু এ থানায় শামীম ওসমানের প্রভাব কাজ করবে সেটাও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকার মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে ১ লাখ ৮৫ হাজার ভোট।

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি জানান, মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মকান্ডে জনগণ সুষ্ঠু নির্বাচনের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা ও অনীহা তৈরি হয়েছে। সন্ত্রাস ও গডফাদারদের থেকে আমরা এখনো বের হয়ে আসতে পারি নাই। এ মানুষগুলো এখনো আছে। প্রশাসনের কর্তাদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে করে নির্বাচনের সময় এরা ব্যালট ছিনতাই, কেন্দ্র দখল না করতে পারে। আর তাই নিয়ে শঙ্কা মানুষের মাঝে। সাত খুনের সঙ্গে অভিযুক্ত হত্যামামলার আসামি, মাদক ব্যবসায়ীরা প্রার্থী হয়েছে। এসব কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে শঙ্কা থাকবেই।

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান জানান, মেয়র প্রার্থীরা ঠিক থাকলেও কাউন্সিলরদের মধ্যে অস্থিতিশীলতা হতে পারে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে।