শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ডিসেম্বরের মধ্যে অবসরে যাবেন ১০ সচিব

ডিসেম্বরের মধ্যে অবসরে যাবেন ১০ সচিব

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশাসনের ১০ সচিবের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ তালিকায় রয়েছেন জনপ্রশাসন, তথ্য, বিদ্যুৎ, পরিকল্পনা বিভাগ, খাদ্য, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিকল্পনা কমিশনের দু’জন সদস্য। এ ছাড়া ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। প্রশাসনের শীর্ষ এসব পদে কারা বসছেন, তা নিয়ে এখন আলোচনার অন্ত নেই।

এদিকে, এসব পদে নিয়োগ পেতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির শুরু হয়েছে। বর্তমানে যারা কর্মরত, তারাও বসে নেই। কীভাবে চুক্তি পেয়ে স্বপদে বহাল থাকা যায়, সঙ্গত কারণেই সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াতে তারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্তি তুলে ধরছেন। চুক্তি নিয়োগ হলে যারা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হবেন, তারাও বসে নেই।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের পদটি ঘিরে প্রশাসনে চলছে নানা গুঞ্জন। এ পদে নতুন কেউ আসছেন, নাকি বর্তমান মুখ্য সচিবই থাকছেনথ তা নিয়ে গুঞ্জন-গুঞ্জরনের শেষ নেই। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান মুখ্য সচিবের স্বপদে বহাল থাকার সম্ভাবনাই বেশি। সূত্র জানিয়েছে, তার কাজকর্মে সরকার সন্তুষ্ট। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নমূলক কাজের তদারকির পাশাপাশি যে কোনো বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে তিনি পারঙ্গম।

এসব কারণে তার চুক্তি নবায়নের সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। তার চুক্তি নবায়ন না হলে তাকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তাকে মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো বড় মন্ত্রণালয়ের সচিব পদেও রদবদল হয়ে যেতে পারে। পরিবর্তন আসতে পারে অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান পদেও।

প্রশাসনের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসনে পদের চেয়ে কর্মকর্তা বেশি হওয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। একজন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি পেয়েও নিচের পদে কাজ করতে হচ্ছে। তারা বলেন, কয়েক বছর আগে গুটিকয়েক কর্মকর্তার জন্য চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। আবারও চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হলে এক ধরনের খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। এতে নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে বিঘেœর সৃষ্টি হবে।

তবে এ যুক্তি মানতে নারাজ প্রশাসনের সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তাদের মতে. পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে চাকরির বয়স ৬০ বছর। কোথাও রয়েছে তারও বেশি। সে হিসেবে বাংলাদেশেও ৬০ বছর হওয়া দোষের কিছু নয়। দেশে গড় আয়ু ও কর্মক্ষমতা অনেকের বেড়েছে। ফলে এখন যাদের ৫৯ বছরে বিদায় দেওয়া হচ্ছে, তাদের অনেকে স্বাচ্ছন্দ্যে আরও পাঁচ/ছয় বছর চাকরি করার ক্ষমতা রাখেন। তারা মনে করেন, একজন সচিব বা সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা যখন দক্ষতার শেষ সীমায় অবস্থান করেন, তখন তাকে তড়িঘড়ি বিদায় না করে তার কাছ থেকে রাষ্ট্রের উচিত আরও বেশি করে সেবা নেওয়া।

জানা গেছে, ডিসেম্বরের মধ্যে যেসব সচিব অবসরে যাবেন, তাদের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আবদুল মান্নান ২ নভেম্বর, বিদ্যুৎ বিভাগের মনোয়ারুল ইসলাম ১৪ ডিসেম্বর, তথ্য সচিব মোর্তজা আহমেদ ২২ ডিসেম্বর, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব তরিকুল ইসলাম ২৬ ডিসেম্বর, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য খোরশেদ আলম চৌধুরী ৩০ ডিসেম্বর, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এম বদরুদ্দোজা ৩০ ডিসেম্বর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ৩০ ডিসেম্বর, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল হান্নান ৩১ ডিসেম্বর, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এম কাদের সরকার ৩১ ডিসেম্বর স্বাভাবিক অবসরে যাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের বর্তমান সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে চুক্তির আকার সীমিত হবে। অনেক পদেই বর্তমানদের আর দেখা যাবে না। তখন নতুনদের এসব পদে সচিব করে আনা হবে। এদিকে, বেশ কিছু মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাহী প্রধানদের তরফে তাদের সচিব বদলির তাগিদ রয়েছে। কারণ, উভয়ের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব দেখা দি”েছ।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, রদবদল রুটিন কাজ। সচিব পদে নিয়োগ ও রদবদলের সিদ্ধান্ত আসে সরকারের উ”চ পর্যায় থেকে। সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন করবে। সমকাল