রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > জামায়াতের হরতালে শুধুই আতঙ্ক!

জামায়াতের হরতালে শুধুই আতঙ্ক!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

সিলেট: সকাল ১০টা। হঠাৎ করে নগরীর কাজিটুলা এলাকায় ১৫-২০ জামায়াত-শিবির ক্যাডার হরতাল, হরতাল স্লোগান দিতে শুরু করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে যান। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা উধাও হয়ে যায়। এলাকা মানুষের মধ্যে ফিরে আসে স্বস্তি।

বাংলামেইলকে এমনটাই জানিয়েছিলেন সিলেট নগরীর কাজিটুলা এলাকার ব্যবসায়ী মনির মিয়া। তিনি বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের হরতাল থাকার পরও দোকানে এসেছি। তবে হঠাৎ করে আমার দোকানের পাশে মিছিল বের করায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’

শুধু ব্যবসায়ী মনির মিয়া নন, জামায়াত-শিবিরের হরতালে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন আরো অনেকেই। জিন্দাবাজারের চায়ের দোকানদার বাবলু মিয়া বাংলামেইলকে বলেন, ‘অন্য কোনো রাজনৈতিক দল হরতাল ডাকলে ভয় থাকে না। তবে জামায়াত হরতাল দিলে আমরা আতঙ্কে থাকি।’

কেন তারা আতঙ্কে থাকনে তাও ব্যাখ্যা করলেন ওই চায়ের দোকানদার। বললেন, ‘অন্য দলের নেতাকর্মীরা রাজপথে মিছিল-মিটিং করেই হরতাল পালন করে। কিন্তু জামায়াত-শিবির হরতাল দিলে অলি-গলিতে মিছিল বের করে। এছাড়াও তারা মিছিল শেষে ভাঙচুর করে। তাই তাদের হরতালে আমরা আতঙ্কে থাকি।’

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় কথা হয় আবুল কালাম নামের এক রিকশা চালকের সঙ্গে।

বাংলামেইলকে তিনি জানান, প্রতিদিন তিনি ভোর ৫টার দিকে নগরীতে রিকশা নিয়ে বের হন। কিন্তু আজ হরতাল থাকার কারণে তিনি সকাল ৮টার দিকে রিকশা নিয়ে নগরীতে আসেন।

নগরীর উপশহর এলাকার এক কলোনীর বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ‘হরতালের কথা শুনে প্রথমে মনে ভয় ছিল। কিন্তু এখন আর ভয় নেই। কারণ সব কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে।’

তবে রিকশা চালক আবুল কালাম এও বলেন, ‘তবে যাই বলেন, আজ (বুধবার) সকাল থেকে রিকশার সব যাত্রীদের মুখে আতঙ্কের চাপ লক্ষ্য করা গেছে।’

এদিকে, বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। একাত্তরের আলবদর বাহিনীর শীর্ষনেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহালের প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতাল সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও চলছে।

নিরুত্তাপ ওই হরতালে সকাল থেকেই নগরীতে রিকশা-অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে যানবাহন ও জনসমাগম।

তবে সকাল ১০টার দিকে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা নগরীর কাজিটুলা এলাকায় একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। ১৫-২০ জন নেতাকর্মী ‘হরতাল’, ‘হরতাল’ স্লোগান দিয়ে পুলিশ আসার আগেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এছাড়াও নগরীর কোন স্থানে হরতালের সমর্থনে মিছিল বা পিকিংটিং করতে দেখা যায়নি।

এদিকে হরতালের সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে আন্তঃজেলা ও দুরপাল্লার অনেক বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। নিয়মিত রুটিনে ছেড়ে গেছে বিভিন্ন রুটের ট্রেনও।

তবে নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছেন। বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশপাশি নগরজুড়ে টহল দিচ্ছে পুলিশের ভ্রাম্যমাণ টিম। পুলিশের পাশপাশি টহল দিচ্ছে র‌্যাব সদস্যরাও।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ বাংলামেইলকে বলেন, ‘জামায়াতের হরতালে পুলিশ সর্থক রয়েছে। নগরীর প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পুলিশ অবস্থান করেছে। এছাড়াও পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরা সকাল থেকে নগরীতে টহল দিচ্ছেন।’

প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার সকালে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণার পর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ দলের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে এ হরতালের ডাক দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মীর কাসেম আলীকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে বুধবার ৯ মার্চ সারা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

তবে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও সংবাদপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। বাংলামেইল২৫ডটকম