বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা : জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের বাসায় বৈঠকের বিষয়ে দলের সাবেক মহাসচিব ও সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে অবশ্যই আলাপ-আলোচনা করা যায়। কিন্তু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বা তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলা দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী। এটা গর্হিত কাজ বা পদক্ষেপ।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় প্রতিক্রিয়ায় তিনি বাংলামেইলকে এসব কথা বলেন।
ছোট ভাই জিএম কাদেরকে এরশাদ দলের কো-চেয়ারম্যান ঘোষণার পর দলটির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়।
সোমবার সন্ধ্যায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠকে রওশন এরশাদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত হয়। গুলশানে রওশনের বাসায় দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান জাপার মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু।
বাবলু বলেন, ‘এরশাদ দলীয় গঠনতন্ত্র না মেনেই তার ছোট ভাইকে কো-চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে কোনো ফোরামেই তিনি আলোচনা করেননি। আমরা গঠনতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে সর্বসম্মতিক্রমে রওশন এরশাদকে দলের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘চেয়ারম্যান কাল (মঙ্গলবার) দুপুরে ঢাকায় আসবেন, সব অবহিত হবেন। আমরা অপেক্ষায় থাকব তার সিদ্ধান্তের।’
হাওলাদার জানান, দলের জাতীয় কাউন্সিলে গঠনতন্ত্র সংশোধন বা যেকোনো পরিবর্তন অনুমোদন দেয়া হয়। কাউন্সিলেই চূড়ান্ত করা হয় চেয়ারম্যান, মহাসচিব, প্রেসিডিয়াম সদস্যদের ক্ষমতা। প্রত্যেক বিষয়ই সেখানে উল্লেখ থাকে। সেটা গঠনতন্ত্রের গাইড লাইন।
গঠনতন্ত্রে পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কাউকে প্রেসিডিয়াম করতে পারেন, কাউকে অব্যাহতি দিতে পারেন। গ্রহণ বা বিদায় বলার এখতিয়ারও তার। তিনি যদি মনে করেন পার্টির শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে বা কেউ দলের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। এই ক্ষমতা গত কাউন্সিলে তাকে দেয়া হয়েছে। এর আগেও এই ক্ষমতা ছিল। সুতরাং চেয়ারম্যানের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সঠিক।
বৈঠক ও রওশন এরশাদকে দলের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘তাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। আবেগে আপ্লুত হয়ে তারা এ কাজটি করেছেন। চেয়ারম্যানের কাছে তাদের আবেদন থাকতে পারে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবেন চেয়ারম্যান। এটা তার এখতিয়ার।’
তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান ঢাকায় না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা উচিত হবে না। তবে জিয়াউদ্দিন বাবলু সাহেব যেভাবে ছটফট করছেন, তার পদ নিয়ে সন্দিহান আছে। বাবলু সাহেবের যে বেদনা সেটা তার বক্তব্যেই দেখতে পেয়েছি। একজন বন্ধু ও সহকর্মী হিসেবে উনি যদি আমার পরামর্শ চান, আমি সাহায্য করব।’
নিজের মহাসচিবের পদ থেকে অব্যাহতির ঘটনা উল্লেখ করে হাওলাদার বলেন, ‘চেয়ারম্যান যখন আমাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দিলেন, আমি এসে নামাজ পড়েছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছি। আমি তো নির্বাচিত মহাসচিব ছিলাম। কোনো নেতার বাড়িতে গিয়ে কাউকে চাপ প্রয়োগ করিনি। প্রেসিডিয়াম সদস্যদের ডাকিনি। সহকর্মীদের ডাকিনি। আমি মনে করেছি যিনি আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন, তিনিই আমাকে অব্যহতি দিয়েছেন। গঠনতন্ত্রে তার সম্পূর্ণ এখতিয়ার আছে।’
দলের এই সাবেক মহাসচিব বলেন, ‘পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান করেছেন। তাকে আহ্বায়ক ও আমাকে সদস্য সচিব করে জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে। আমি সর্বেমাত্র দায়িত্ব পেয়েছি। এখনও কার্যকর হয়নি। এখন একটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। তার পর উপকমিটি করা হবে।’ বাংলামেইল২৪ডটকম