শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > আলোর বেগ ও আপেক্ষিকতা

আলোর বেগ ও আপেক্ষিকতা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: আলো এক প্রকার শক্তি। শুধুই শক্তি আর কিছু নয়? আলো কি পদার্থ নয়? কোন বস্তুকে পদার্থ হতে গেলে তার কিছু ধর্ম থাকতে হয়। যেমন- (ক) কঠিন পদার্থকে ধরা-ছোঁয়া যায়, এর নির্দিষ্ট একটা আয়তন আছে। (খ) তরল পদার্থের নির্দিষ্ট আকার নেই। কিন্তু স্পর্শ যায়। বল প্রয়োগে বাধাও দেয়। যখন যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। তরল তবুও পদার্থ।

(গ) গ্যাসের আকার, আয়তন কোনটিই নেই। ধরা যায় না। তবে স্পর্শ করা যায়। কিছু কিছু গ্যাস স্পর্শ অনুভূতিরও বাইরে। কিন্তু গ্যাস একটা জায়গা দখল করে থাকে। নির্দিষ্ট পাত্রে গ্যাস রাখলে তা পাত্রের সবটুকু জায়গা জুড়ে অবস্থান করে। কিন্তু ওই পাত্রে যদি ক্রমশ গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায়, তাহলে এক সময় পুরো পাত্রটি গ্যাস দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। এরপর আরও গ্যাস ঢোকালে পাত্রটির ভেতরে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাবে। একসময় তীব্র চাপে গ্যাস তরলে পরিণত হবে না। তখন শত চেষ্টা করলেও পাত্রটিতে আর বাড়তি গ্যাস ঢোকানো যাবে না। তখন জোরাজুরি করলে পাত্রটিই বিস্ফোরিত হতে পারে। এ থেকে প্রমাণ হয়, গ্যাসীয় পদার্থও বল প্রয়োগে বাধা প্রদান করে।

তাছাড়া তাপমাত্রা ও চাপের পরিবর্তন ঘটিয়ে তরল ও গ্যাসকে কঠিন পদার্থে পরিণত করা যায়। অর্থাৎ পদার্থ কঠিন হোক আর তরল কিংবা বায়বীয় হোক, এদের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। সবচেয়ে বড় কথা, তিন ধরনের পদার্থকে বিভাজিত করলে শেষ পর্যন্ত অণু-পরমাণু পাওয়া যাবে। এদের ভরও আছে।

আলোর ক্ষেত্রে কি এসব ব্যাখ্যা চলে? উত্তর সোজা। না, চলে না। তাহলে আলো কি পদার্থ নয়, শুধুই শক্তি? কী ধরনের শক্তি? এর কী প্রভাব আছে?

আলো কী, তার প্রথম ব্যাখ্যা দিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন। ১৬৬৫ সালে। এতদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল সূর্য বা নক্ষত্রের সাদা আলো মৌলিক। তাহলে রঙধনুতে সাত রঙের অস্তিত্ব কীভাবে আসে? এর উত্তর খুঁজতেই নিউটন প্রিজম ব্যবহার করলেন। এজন্য তিনি একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘর বেছে নিলেন। একটা ছোট্ট ছিদ্র রাখলেন সেই ঘরে। সেই ছিদ্রের ভেতর দিয়ে ঘরে ঢুকল একগুচ্ছ সূর্যরশ্মি। সাদা আলোর সেই রশ্মিকে তিনি প্রিজমের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত করলেন। সূর্যের সাদা আলো ভেঙে তখন রঙধনুর সাতটি রঙ এ বিভক্ত হয়ে গেল।

নিউটনের মনে প্রশ্ন জাগল, কেন এভাবে সাদা আলো ভেঙে বিশ্লিষ্ট হয়ে গেল? তাহলে কি আলো কোনও কণা দিয়ে তৈরি? নিউটন আলোর কণা ধর্ম প্রতিষ্ঠিত করলেন। কিন্তু আলোক রহস্যের সবে মাত্র শুরু। সেই রহস্যের সম্পূর্ণটা ছাড়াতে প্রায় তিন শতাব্দী লেগে গেছে।

নিউটন আলোর কণা ধর্ম নিয়ে ভাবলেন। আলোর গতি নিয়ে তার ভাবনা আসেনি। সুতরাং আলোর যে গতি আছে, সেটা যে নির্দিষ্ট সে কথা কারও খেয়াল হলো না। আর এজন্য অপেক্ষা করতে হলো আরও ১১ বছর।

১৬৭৬ সাল ডেনমার্কের জ্যোতির্বিদ ওলে ক্রিস্টেনসেন রোমার লক্ষ করলেন এক আশ্চর্য ঘটনা। বৃহস্পতির উপগ্রহগুলোতে গ্রহণ। আমরা জানি, সৌরজগতের গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। প্রত্যেকের একটা নির্দিষ্ট কক্ষপথ আছে। কক্ষপথগুলি গোলাকার নয়। উপবৃত্তকার। সুতরাং এর গ্রহগুলি সব সময় পরস্পর থেকে সমান দূরত্বের অবস্থান করে না। পৃথিবী আর বৃহস্পতির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।