শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > কালীগঞ্জের চুপাইর জামিউল উলুম আলিম মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম

কালীগঞ্জের চুপাইর জামিউল উলুম আলিম মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার চুপাইর জামিউল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আঃ সাত্তারের বিরুদ্ধে প্যাটার্ন বর্হিভূত শিক্ষক নিয়োগ সরকারী অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
জানা যায়, শরির চর্চা শিক্ষকের শূন্য পদের বিপরীতে সামাজিক বিজ্ঞান পদে তাঁহার স্ত্রী কানিজ ফাতেমাকে নিয়োগ প্রদান (ইনডেক্স নং ২১০১৭৬২) করেন। শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত পরিপত্র স্মারক নং শা ১৩/এমপিও-১২/২০০৯/৭৫ তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি-২০১০ এর ৬.৩ এর ‘খ’ নম্বর বিধিতে আলিম মাদ্রাসার জনবল কাঠামো অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক (বাংলা/ইংরেজী/সামাজিক বিজ্ঞান/ব্যবসায় শিক্ষা) পদে দুইজন করে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে প্রাপ্যতা রয়েছে। ওই মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ উক্ত পরিপত্রের শর্ত লঙ্গন করে সামাজিক বিজ্ঞান পদে ইতোপূর্বে দু’জন শিক্ষক নিয়োগ থাকার পরও তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতেমাকে অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগ প্রদান করে একই সময় পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর কালীগঞ্জ উপজেলার দোলান বাজার শাখায় ক্যাশিয়ার পদে ফুল টাইম (৯টা-৫টা) চাকুরি করেন এবং একই সময়ে উভয় প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি কখন কোথায় কিভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল মাদ্রসায় কর্মরত শিক্ষক, এলাকাবাসীর কারো জানা ছিল না। এমনকি কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল তা অদ্যাবধি কেউ জানেন না।
অধ্যক্ষ কর্তৃক বিভিন্ন দপ্তরের প্রেরিত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, কানিজ ফাতেমাকে কখনো সামাজিক বিজ্ঞান আবার কখনো শরির চর্চা শিক্ষক হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এদিকে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকগণ অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ সাহেব প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পদের সুবিধা ভোগ করে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীতে কমিশন ভিত্তিক কাজ করে মাদ্রাসার কাজে ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন।
এ দিকে অধ্যক্ষের স্ত্রীর নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির দাতা সদস্য মোঃ হেকমত আলী বিগত ১৮/১০/১৫ খ্রি: শিক্ষা সচিব বরাবরে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। সম্প্রতি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (বিশেষ) মোহসেনার স্বাক্ষরিত একটি পত্র গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করেন। উক্ত পত্রে দশ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
কোন বিষয়ের শিক্ষক? জানতে চেয়ে কানিজ ফাতেমাকে ফোন করলে তিনি বলেন, আমার জানা নেই অধ্যক্ষ সাহেব ভালো বলতে পারবেন বলে সেলফোনের লাইন কেটে দেন।
নিয়োগ বিষয়ে অধ্যক্ষ আঃ সাত্তার বলেন, গভার্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ‘সামাজিক বিজ্ঞান ব্রেকেটে শরির চর্চা’ শিক্ষক হিসেবে কানিজ ফাতেমাকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তবে অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি অধ্যক্ষ সাহেব স্বীকার করেন।
এ তদন্তের বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা এ প্রতিবেদককে বলেন, তদন্তের চিঠি পেয়েছি এবং নির্দিষ্ট সময়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হবে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষের নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে ইতোপূর্বে সাপ্তাহিক বাংলাভূমি’তে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও এলাকার সচেতন মহল একটু নড়েচড়ে বসেন। এলাকাবাসী অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিচার ও তাঁর অযোগ্য স্ত্রীর অপসারণ দাবী করে আসছেন।