শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > উগ্রপন্থীদের চক্রান্ত ঠেকাতে বন্ধ সোশ্যাল মিডিয়া!

উগ্রপন্থীদের চক্রান্ত ঠেকাতে বন্ধ সোশ্যাল মিডিয়া!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে জনমণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে উগ্রপন্থীরা—এমন আশঙ্কায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফেসবুক, হোয়াটসআপ, ভাইবার, ম্যাসেঞ্জার, লাইন, টেঙ্গো ও হ্যাংআউট। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে রিভিউয়ের আদেশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র দেশে ধর্মীয় উস্কানিসহ নাশকতা সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে। গোয়েন্দাদের এমন তথ্যের ভিত্তিতেই সোশ্যাল মিডিয়াগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তবে, ফেসবুক শিগগিরই খুলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও বিভিন্ন অ্যাপস এখনই খুলছে না। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বুধবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা পাঠানো হয়। ওই নির্দেশনার পর সোশ্যাল মিডিয়াগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ফেসবুকসহ আরও কিছু সোশ্যাল মিডিয়া আপাতত বন্ধ রাখার পেছনে সরকারের আরও পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে অপরাধ ও অপরাধীদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ঠেকানোর বিষয়কে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে সরকার।

সূত্রমতে, সরকারের পক্ষ থেকে জন-নিরাপত্তার স্বার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর এ হস্তক্ষেপ। তবে, এর পেছনের অন্যতম কারণ হলো, সোশ্যাল মিডিয়ার অপপ্রচার রোধ করা।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাময়িকভাবে ফেসবুক ও কিছু অ্যাপস বন্ধ করা হয়েছে। জন-নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের সাময়িক অসুবিধার জন্যে দুঃখিত। তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আমরা যদি একটি জীবনও বাঁচাতে পারি ক্ষতি কী?

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। তবে তিনি বলেন, ইতোপূর্বে বিভিন্ন ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, যারা নাশকতার ঘটনা ঘটাচ্ছে, তারা বেশির ভাগই সংঘবদ্ধ হয়ে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে। এসব অ্যাপস ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা কঠিন।

সূত্র জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় বহাল থাকার পরপরই একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। ধর্মীয় উস্কানিসহ নানা অপপ্রচারের শুরু করে। এ সব করে ওই মহলটি জনমনে ভিন্ন একটি ‘সেন্টিমেন্ট’ গড়ে তুলতে চায়—এমন তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সরকার এ কারণেই সাময়িকভাবে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো বন্ধ করে দেয়।

সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলের মতে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপপ্রচার ও অপরাধীদের সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা সরকারের নখদর্পণে থাকে। কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে নাশকতার পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করতে দেরি হয়। মূলত এমন চিন্তা থেকেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সরকারের দুজন মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এর আগে জামায়াত নেতা সাঈদীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ফেসবুকে অপপ্রচার চালানো হয়েছে সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে বলে । সংঘবদ্ধ একটি চক্র এ কাজ করেছে।

সূত্রমতে, মূলত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরসহ উগ্রপন্থী কোনও গোষ্ঠী যেন জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে না পারে, সে কারণেই সোশ্যাল মিডিয়াগুলো আপাতত বন্ধ করে রাখা হয়েছে।বাংলা ট্রিবিউন