রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > পোশাক শিল্পে বাড়ছে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি

পোশাক শিল্পে বাড়ছে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: একদিকে বিদেশি নাগরিক হত্যা ইস্যু, অন্যদিকে কারখানায় শ্রমিকদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিবাদে শ্রমিক সংগঠনগুলো যখন সোচ্চার, তখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পোশাক শিল্প কারখানাগুলোতে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বিজিএমইএ (বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি) সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে গার্মেন্টস কারখানাগুলোর মধ্যম পর্যায়ের কর্মী বাহিনীর বড় অংশে কাজ করছেন বিদেশি নাগরিকরা। প্রায় ৩০ হাজার বিদেশি নাগরিক কাজ করছেন দেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে। তাদের বেশিরভাগই ভারত ও শ্রীলংকার নাগরিক। সম্প্রতি দেশে দুইজন বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় গার্মেন্টস শিল্পের ক্রেতারাও রয়েছেন শঙ্কায়।

তাছাড়া শ্রমিক নিরাপত্তা ইস্যুতে শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রচার-প্রচারণা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জায়গা করে নেওয়ায় চাপ বাড়ছে ক্রেতাদের পক্ষ থেকে।

অন্যদিকে আমেরিকান জিএসপি তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ পড়ায় একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বাংলাদেশের ইমেজ নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণায় নেমেছে। আর এসব সমস্যা মোকাবেলায় গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থা।

তবে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার গার্মেন্টসগুলোর ওপর নজরদারি একটি রুটিন ওয়ার্ক বলে দাবি করেছেন বিজিএমইএ’র সহ সভাপতি মোহাম্মদ নাসির।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি সব সময়ই থাকে। তাছাড়া সম্প্রতি যেহেতু দুইজন বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে, সেহেতু এ খাতে নজরদারি বাড়তেই পারে। কারণ, বাংলাদেশের এ শিল্পের সঙ্গে অনেক বিদেশি নাগরিক প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। সরকারের শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানো হলে আমরাও খুশি হবো।

তবে বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে এখন আর শ্রমিকদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

মোহাম্মদ নাসির বলেন, দেখুন শ্রমিকদের নিরাপত্তা ইস্যুতে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারির কোনো প্রশ্নই আসে না। কারণ, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের চিত্র পুরোই পরিবর্তিত হয়েছে। এখন আর কোথাও শ্রমিকদের মানসিক-শারীরিক নির্যাতন হয় না।

তবে বিজিএমইএ’র সহ সভাপতির সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন শ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবকাঠামোর আমূল পরিবর্তন হয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু শ্রমিক নিরাপত্তা ইস্যুতে কিছুতেই বলা যাবে না যে, এখন আর কোথাও শ্রমিক নির্যাতন হচ্ছে না। এখনো অনেক জায়গা থেকে আমরা শ্রমিকদের ওপর মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ পাচ্ছি। এমনকি তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানোরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত। আর তাতে শিল্প গোয়েন্দা সংস্থার এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত যাতে শ্রমিকদের নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া যায়।

সম্প্রতি রাজধানীতে তাবেলা সিজার নামে এক ইতালীয় নাগরিক ও রংপুরে হোশি কুনিও নামে এক জাপানি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মার্কিন বাজারে এখনও বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা।

২০১৩ সালে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের প্রেক্ষাপটে ওই বছরের ২৭ মে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ওপর দেওয়া জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম