সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ॥ ভোগান্তি নগরবাসীর, দীর্ঘ পরিকল্পনায় ডিসিসি

বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ॥ ভোগান্তি নগরবাসীর, দীর্ঘ পরিকল্পনায় ডিসিসি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: সড়কে ডাস্টবিন। চারদিকে ছড়ানো-ছিটানো ময়লা। কাপড় দিয়ে নাক চেপে রাস্তায় পার হচ্ছে মানুষ। এমন চিত্র রাজধানী ঢাকায় নতুন নয়।

কিন্তু এভাবে আর কতো দিন? নগরবাসী তাদের জীবন মানোন্নয়নের পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনারও উন্নতি চায়। রাস্তাঘাটে ময়লা স্তুপ আর দুর্গন্ধ থেকে নিস্তার চায় তারা।

সেজন্যই ভোট দিয়ে নগরপিতা নির্বাচন করেছেন তারা। কিন্তু বাসযোগ্য ও বিশ্বামানের নগরী গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত মেয়রদের চার মাস অতিবাহিত হলেও তেমন অগ্রগতি হয়নি নগর সেবায়, অভিযোগ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনবাসীর।

মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন। দীর্ঘিদিনের সমস্য হুট করেই সমাধান সম্ভব নয়। সেজন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।

ঢাকা দক্ষিণের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অগ্রগতির বিষয়ে সরেজমিন দেখা যায়, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু (পশ্চিম অংশ) থেকে নেমেই হাতের ডানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। পাশেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। বুয়েট ও ঢামেক’র প্রবেশপথে উঁচু ময়লার স্তুপ। এখান দিয়ে পথচারীদের নাক চেপে পথ চলতে হয়।

একপাশে ময়লার স্তুপ। অপর পাশে ময়লা বহনকারী ছোট ছোট গাড়ি। ২৪ ঘণ্টাই এ রাস্তার দীর্ঘ জায়গা জুড়ে বর্জ্য ছাড়ানো-ছিটানো থাকে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়, পাশে বেঁধে রাখা ঘোড়ার বর্জ্য। এর সব দুর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারীদের।

একই অবস্থা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিডফোর্ড হাসপাতাল), কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বংশাল সুরিটোলা স্কুল, নারিন্দা মাধব গৌড়িয় মঠের সামনের রাস্তার। এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সামনে ডাস্টবিন দেখে মনে হয়, ময়লার বাজার।

এছাড়াও রাজধানীর প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা (শহীদ ফারুক সড়কের মাথায়), গোলাপবাগ, টিটি পাড়া, বাসাবো, খিলগাঁও, মতিঝিল, আরামবাগ, মালিবাগ, মগবাজার, ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সদরঘাট, নয়াবাজারসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার ডাস্টবিনগুলোর বেশির ভাগই স্কুল-কলেজ বা হাসপাতালের সামনে। এগুলো একে তো রাস্তার উপর। তার ওপর সারাদিনে টোকাই, কাক, কুকুরের নাড়াচাড়ায় ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে।

এতে দুর্গন্ধ ও মশা-মাছির উপদ্রব বেশি হয়। যাতে সারা বছরই ভোগান্তি পথচারীদের। এতদিন মেয়র ছিল না বলে এ অবস্থা ছিল। এখনও কেন একই দশা- প্রশ্ন নগরবাসীর। অনেকেই অভিযোগ করছেন, নির্বাচিত মেয়র যখন ছিল না, তখন যে অবস্থা ছিল, এখনও একই অবস্থা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় (অপসারণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা) কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এমন অব্যবস্থাপনার কথা স্বীকার করেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ডাস্টবিনের ময়লা পরিষ্কার করা হয় দিনে একবার। আর ফেলা হয় বারবার। দেখা যায়, ময়লা পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে আবার ফেলা হচ্ছে। এজন্য ময়লা থেকেই যায়।

তিনি আরও বলেন, তবে আমরাও বসে নেই। কাজ করে যাচ্ছি। সমস্যা দীর্ঘদিনের, সমাধানেও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম তদারকির জন্য ১০ জন কাউন্সিলরকে দিয়ে দু’টি টিম গঠন করে দিয়েছি। কাউন্সিলরদের বলেছি, প্রতিটি ওয়ার্ডে একটা বা দুইটা স্টেশন বানানোর জন্য জায়গা খুঁজতে। যেন পুরো ওয়ার্ডের ময়লা সুনির্দিষ্ট স্টেশনে রাখা যায়।

এছাড়াও বর্জ্য যেন যখন-তখন যেখানে-সেখানে না ফেলা হয়, সেজন্য প্রতিটি পরিবারের কাছে ব্যাগ (গর্ভেজ ডিসপোজাল ব্যাগ) পৌঁছে দিচ্ছি, বলেন খোকন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অফিসার ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচিত মেয়র আসার পর থেকে অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। তিনি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের তৎপর হতে বলেছেন। কন্টেইনারগুলো যথাসময়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজের তদারকি করছেন। এখন আগের চেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সব কাউন্সিলরদের বর্জ্য স্টেশনের জন্য জায়গা বের করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। এছাড়াও মেয়রের নেতৃত্বে আমরা ৫টি জোনের ৫টি ওয়ার্ডে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ১০ হাজার পরিবারকে ময়লা রাখার জন্য পলিথিন ব্যাগ বিতরণের কাজ করেছি। পর্যায়ক্রমে এ ব্যাগ সবাইকে দেবো।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ঘোষণা দিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে ৬০-৭০ শতাংশ বর্জ্য রাস্তায় পড়ে থাকবে না। এজন্য তিনি ৭০টি জায়গা চিহ্নিত করেছেন। যেখানে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বর্জ্য স্টেশন করা হবে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম