শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > শেষ বলের ছক্কায় জয় পাকিস্তানের

শেষ বলের ছক্কায় জয় পাকিস্তানের

শেয়ার করুন

স্পোর্টস ডেস্ক ॥  দুই নবীন আর এক প্রবীণের দারুণ নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টি-২০তে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। নাটকীয়তায় ভরা শেষ ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন অভিষেক হওয়া ব্যাটসম্যান জুলফিকার বাবর। শনিবার সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে পাকিস্তান ২ উইকেটে হারায় ক্যারিবীয় দলকে। স্বাগতিকদের ৭ উইকেটে করা ১৫২ রান টপকায় তারা ৮ উইকেট হারিয়ে।  শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬ রান। বল করতে আসেন টি-২০ বিশ্বকাপের নায়ক মারলন স্যামুয়েলস। এ স্পিনারের প্রথম বলেই সোজা ব্যাটে চার মেরে পাকিস্তানিদের বুকের বোঝা হালকা করে ফেলেন আগের ১২ বলে তিন রান করা জুলফিকার বাবর। পরের দুই বলে কোন রান পাননি তিনি। চতুর্থ বলে লেগবাইয়ের সুবাদে এক রান নিলে স্কোর সমান হয়ে যায় দুই দলের। দুই বলে চাই এক রান। ল্য তখন সহজই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ওই এক রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে যান সাঈদ আজমল। উত্তেজনা তখন দুই শিবিরেই। টাই হলে খেলা গড়াবে সুপার ওভারে। খানিকটা আশার আলো তখনও ক্যারিবীয় দ্বীপে। শেষ বলটি ইয়র্কার দিতে চেয়েছিলেন হয়তো। কিন্তু নিচু হয়ে আসা বলটি ফুলটসে রূপ নেয়। বাবর ব্যাটের তলা দিয়ে উঠিয়ে বল সোজা পাঠিয়ে দেন সীমানার বাইরে। অবাক ক্যারিবিয়ানরা তাকিয়ে দেখতে থাকেন পাকিস্তানিদের উল্লাস। তবে বলে রাখা ভাল দলে নবীন হলেও জুলফিকার বাবর কিন্তু বয়সে নবীন নন। ৩৪ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেলেন এই ক্রিকেটার। এর আগে ১১৬ রানের মাথায় পাকিস্তান ষষ্ঠ উইকেট হারালে আশঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু সপ্তম উইকেটে শহিদ আফ্রিদি অনেকটা একাই দলকে এগিয়ে নেন। বাবর ছিলেন দর্শক। ২৯ রানের জুটিতে তার সংগ্রহ তখন ২ রান। গ্যাব্রিয়েলের বলে ব্রাভোর হাতে ধরা পড়ার আগে আফ্রিদি ২৭ বলে করেন ৪৬ রান। দুটি ছক্কা আর চারটি চার ছিল তার ইনিংসে। ম্যাচ সেরাও হন তিনি।
শুরুতে মাত্র ১০ রানে দুই ওপেনার নাসির জামশেদ ও আহমেদ শেহজাদকে হারিয়ে বিপদে পড়ে   পাকিস্তান। প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে তারা অভিষেক হওয়া ব্যাটসম্যান উমর আমিনের দৃঢ়তায়। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক হাফিজ ও উমর আমিন ৩৫ রান যোগ করেন যা ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটিও। ৭ বলে ১৩ রান করে হাফিজ আউট হলেও অবিচল আমিন। তিনি আউট হওয়ার আগে ৪৭ রান করেন। ৩৪ বলের ইনিংসে ৯ বার বল সীমানার বাইরে পাঠান তিনি। গ্যাব্রিয়েল ৩ উইকেট পেলেও রান দেন ৪৪টি। তার এক ওভারে আমিন তিনটি চার মারেন।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়ে পাকিস্তানি স্পিনারদের বলে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একদিকে অভিজ্ঞ হাফিজ আরেক দিকে বাবরের আঘাতে ৪২ রানে চার উইকেট হারায় তারা। পরে ব্রাভো, পোলার্ড ও স্যামির দৃঢ়তায় তারা দেড় শ’ পার করে। পোলার্ড ৩৬ বলে ৪৯ রান করে অপরাজিত থাকলেও চমক দেখান স্যামি। তিনি তিনটি ছক্কা আর দুটি চারের মারে মাত্র ১৪ বলে করেন ৩০ রান। পোলার্ড দুটি ছক্কা আর চারটি চার মারেন। পাকিস্তানের বাবর তিন উইকেট নেন ২৩ রানে। দুই পেসার ইরফান (১/৩৯) ও জুনায়েদই (০/৩৪) বেশি রান দেন। ১৪ ওভারে চার স্পিনার ৭৪ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট। আর দুই পেসার ৬ ওভারে ৭১ রান দিয়ে পান মাত্র ১ উইকেট। আজমল-আফ্রিদি রান কম দিলেও কোন উইকেট পাননি। গত রাতে এ মাঠেই হবে দ্বিতীয় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল।

সংপ্তি স্কোর
সংপ্তি স্কোর: ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ২৫২/৭ (পোলার্ড অপ. ৪৯, স্যামি ৩০, ব্রাভো ২৫, স্যামুয়েলস ২৫, সিমন্স ৬, গেইল ৫, চার্লস ১, বাবর ৩/২৩, হাফিজ ২/৪, ইরফান ১/ ৩৯, জুনায়েদ ০/৩৪, আজমল ০/২৩, আফ্রিদি ০/২৪)।
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৫৮/৮  (উমর আমিন ৪৭, আফ্রিদি ৪৬, বাবর  অপ. ১৩, হাফিজ ১৩, হাম্মাদ আজম ১০, আকমল ৯, জামশেদ ৬, শেহজাদ ৩, গ্যাব্রিয়েল ৩/ ৪৪, বাদ্রি ১/২৭, নারিন ১/২৪)।
ফল:  পাকিস্তান ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : শহিদ আফ্রিদি।