রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > পাহাড়ে অশনি সংকেত

পাহাড়ে অশনি সংকেত

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
পাহাড়ে সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে দমনে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বলে মনে করছেন পার্বত্য পর্যবেক্ষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই অংশ হিসেবে শনিবার ভোর ৫টার দিকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির দুর্গম রূপকারী এলাকায় অভিযান চালালে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় সংস্কারপন্থী জনসংহতি সমিতি (জেএসএস, এমএন লারমা) গ্রুপের পাঁচজন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর সশস্ত্র পাহাড়িগ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে এটিই প্রথম পরিচালিত বড় ধরণের অভিযান। আর একসঙ্গে পাঁচজনের নিহতর ঘটনাও এই প্রথম।

পাহাড়ের একাধিক সূত্র জানায়, এর আগে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট) এবং সংস্কারপন্থী হিসেবে চিহ্নিত জেএসএস (এমএন লারমা) গ্রুপের বিচ্ছিন্ন বেশ কিছু অভিযান ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

ঢ়পলংং-০১-হবংিহবীঃনফএর আগে সেনা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গ্রুপগুলোর বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২০০৯ সালের ১১ মে। ওই দিন রাঙামাটি সদর উপজেলার কাতলছড়ি এলাকায় সেনা সদস্যরা ইউপিডিএফ’এর একটি আস্তানায় অভিযান চালালে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে ইউপিডিএফ’র দুই সদস্য নিহত হয়।

আবার চুক্তির পক্ষে-বিপক্ষের সশস্ত্র গ্রুপগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেও হতাহতের ঘটনা ঘটছে। অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, পাল্টা অপহরণ – ইত্যাদি ঘটনাও রয়েছে।

শান্তিচুক্তি পক্ষীয় জনসংহতি সমিতির একজন নেতা বলেন, শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর শনিবারের অভিযানটিই এখন পর্যন্ত পরিচালিত সবচেয়ে বড় সেনা অভিযান। আর এতে নিহতর সংখ্যাও বেশী।

খাগড়াছড়ির সেনা বিগ্রেডের মুখপাত্র মেজর রোবায়েত জামিল সাংবাদিকদের জানান, শনিবার ভোর ৫টার দিকে জেএসএস (এমএন লারমা) গ্রুপের ঘাঁটিটি ঘেরাও করা হয়। সেনা উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গুলি ছুঁড়লে সেনা বাহিনীও পাল্টাগুলি ছোড়ে। উভয়পক্ষের গোলাগুলিতে ঘটনাস্থলেই জেএসএস (এমএন লারমা) গ্রুপের পাঁচ সদস্য মারা যায়। উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে একজন সেনা সদস্যও আহত হন।

তিনি জানান, পরে সংঘর্ষস্থল থেকে তিনটি এসএলআর, দুটি চায়নিজ রাইফেল, একটি এমএসজি, একটি নাইন এমএম পিস্তল, ১৪টি ম্যাগজিন, ৪৭২টি গুলি ও কার্তুজ এবং সেনা পোশাক উদ্ধার করা হয়।
২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল দীঘিনালায় এক কংগ্রেসে গঠিত হয় সাবেক গেরিলা নেতা সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস বিরোধী গ্রুপ জেএসএস (এমএন লারমা)। সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত এ গ্রুপের সভাপতি সুধাসিন্ধু খীসা এবং সহ সাধারণ সম্পাদক রূপায়ন দেওয়ান।

তাদের অভিযোগ, আপোষকামীতায় সন্তু লারমার গ্রুপটি পরিনত হয়েছে সরকারেরই একটি অংশে। আর শান্তিচুক্তির মৌলিক শর্তসমূহ বাস্তবায়ন না করায় পাহাড়ে আবারো সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হতে পারে বলে একাধিকবার ইঙ্গিত দিয়েছেন সন্তু লারমা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জেএসএস (এমএন লারমা) জোট বাঁধে চুক্তি বিরোধী অপর গ্রুপ ইউপিডিএফ’র সঙ্গে। তারাও ইউপিডিএফ’র কায়দায় শুরু করে সশস্ত্র তৎপরতা।

পার্বত্য দলগুলোর তথ্য মতে, শান্তিচুক্তির স্বাক্ষরের পর সেখানকার পাহাড়ি সংগঠনগুলোর সংঘাতে নিহত হয়েছে অন্তত পাঁচশ নেতা-কর্মী। ২০১১ সালের নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী, সবক’টি গ্রুপের নিহতর সংখ্যা ছিল কমপক্ষে ৩৬৫ জন। এরমধ্যে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির ১৯৯ জন, ইউপিডিএফ’র ১৪০ জন এবং সুধাসিন্ধু ও রূপায়নের নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) ২৬ জন নেতাকর্মী ও সমর্থক রয়েছে। সংবাদ২৪.নেট ডেস্ক