শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > নতুন দিনের আশায় ছিটমহলবাসী

নতুন দিনের আশায় ছিটমহলবাসী

শেয়ার করুন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ॥
বহুল প্রতীক্ষিত স্থলসীমান্ত বিলটি বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাস হলে দু’দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) ছিটমহলের মানুষের বন্দী জীবনের অবসান ঘটবে।

এর আগে মঙ্গলবার ভারতীয় মন্ত্রিসভায় সীমান্ত বিলটি অনুমোদনের পর বুধবার রাজ্যসভায় পাস হয়েছে।

এই খবরে দু’দেশের ১৬২টি ছিটমহলের ৫১ হাজার ৫৮০ জন মুক্ত জীবনের আশায় আনন্দে উদ্বেলিত। আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন তারা।

বৃহস্পতিবার লোকসভায় বিলটি পাস হলেই বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১১১টি ছিটমহলের ৩৭ হাজার ৩৬৯ জন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের ১৪ হাজার ২১১ জন ভারতীয় নাগরিকত্বের সুবিধা পাবে।

বিলটি পাস ও বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ পাবে ১১১টি ছিটমহলের ১৭ হাজার ২৫৮ একর জমি। ভারত পাবে ৫১টি ছিটমহলের ৭ হাজার ১১০ একর জমি।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের বাসিন্দা সাবিনা খাতুন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ভারতে ছিটমহলের বিল পাস হওয়ায় নিজেদের মুক্ত পাখির মতো মনে করছি। আমরা আর বন্দী নই। স্কুল-কলেজ হলে ছেলে-মেয়েদের পড়া-লেখা করাতে পারবো।’

ফুলবাড়ী উপজেলার কালিরহাট ছিটের বাসিন্দা ইসহাক আলী বলেন, ‘দীর্ঘ বঞ্চনার পর নাগরিকত্বের পরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকার আশায় আমরা ছিটবাসীরা উচ্ছ্বসিত। আমরা আশা করি দ্রুত ছিটমহল বিনিময় করে ছিটমহলবাসীর অবরুদ্ধ জীবনের অবসান ঘটানো হোক।’

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘স্থলসীমান্ত বিলটি পাস হওয়ায় ছিটবাসীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফল পেয়েছি। আশা করি লোকসভায় বিলটি পাস হওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা বাস্তবায়ন করা হবে। ছিটবাসীরা নাগরিকত্ব পেয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরতে-ফিরতে পারবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

১৯৭৪ সালে ছিটমহল বিনিময়ে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে দু’দেশের ছিটবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে ঢাকায় হাসিনা-মনমোহন প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৩ সালে ভারতের কংগ্রেস সরকার ল্যান্ড বাউন্ডারি চুক্তির বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপনের চেষ্টা করলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আপত্তির মুখে বিলটি আলোর মুখ দেখেনি।

নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। তখন নমনীয় হয় মমতা ব্যানার্জী।

৪ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এক জনসভায় ছিটমহলবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে ছিট বিনিময়ে তার সম্মতির কথা জানান।