শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > সিটির ভোটযুদ্ধে জামায়াতের তিন কৌশল

সিটির ভোটযুদ্ধে জামায়াতের তিন কৌশল

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: আসন্ন তিন সিটি (ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম) করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনো জানায়নি বিএনপি। যদিও বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতা সাংবাদিকদের কাছে অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

৩১ মার্চ মঙ্গলবার শত নাগরিক কমিটির হয়ে ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দীন আহমদ বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিএনপি অনুকূল পরিবেশ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পেলে নির্বাচনে যাবে। তাই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না জানালেও বিএনপি নির্বাচনে যাবেই—এটা এক প্রকার অবধারিত বলে ধরে নিয়েছে জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আর সে অনুযায়ী কৌশল ঠিক করে এগুচ্ছে দলটি।

জোটের মেয়র প্রার্থী এবং দলের কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিজয়ী করতে এবার কোমর বেঁধে নামবে দলটি। সেজন্য দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। এমন ধারণা পাওয়া গেছে সংগঠনটির বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে।

‘কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয়ী করতে হবে’–এই বিষয়টি মাথায় রাখার পাশাপাশি তিন সিটিতে মেয়র প্রার্থীদের বিজয়ী করে আনাকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে জামায়াত। তাই এবারের নির্বাচনের মাঠের লড়াইয়ে প্রধান তিনটি কৌশলকে সামনে নিয়ে এগুতে চায় জামায়াত।

সূত্র জানায়, জামায়াতের তিন কৌশলের মধ্যে আছে: সরকারের বিভিন্ন সময়ের ব্যর্থতার চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরা, ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের (মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থী) বিশেষ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারকে আকৃষ্ট করা এবং নির্বাচনের মাঠে পুরুষ সদস্যদের চেয়ে নারী সদস্যদের ব্যবহার করা। এই তিন কৌশলকে সামনে রেখেই ভোটযুদ্ধে নেমেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। দিনকয় আগে (গত শুক্রবার) জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের কেন্দ্রীয় এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের ব্যর্থতার চিত্রটা ভোটারদের কাছে তুলে ধরতে পারাটাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। কারণ সরকার বিভিন্ন সময় নিজেদের ব্যর্থতাগুলোকে ঢাকতে বিভিন্ন ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছে। মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ফেরানোর জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাটক তৈরি করেছে। আমরা মনে করি, সরকারের ব্যর্থতাগুলোই আমাদের প্রধান হাতিয়ার ।তাছাড়া আমরা শুধু সমালোচনার খাতিরে সমালোচনা নয়, সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধানও ভোটারদের সামনে তুলে ধরবো ।

সূত্র জানায়, জামায়াত নির্বাচনের মাঠে কাজ করতে এই দুটি কৌশলের পাশাপাশি আরো একটি কৌশল অবলম্বন করেছে। সেটি হলো, এবারের নির্বাচনের মাঠে জামায়াতের পুরুষ সদস্যদের চেয়ে নারী সদস্যদের উপস্থিতি বেশি থাকবে। কারণ পুরুষ নেতাকর্মীদের নামে শতশত মামলা থাকায় তারা আছেন গ্রেফতার-আতঙ্কে। তাই তারা প্রকাশ্যে আসতে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছেন। ঝামেলা এড়াতে জামায়াত তাই এবারের নির্বাচনের মাঠে তাদের নারী কর্মীদের বেশি ব্যবহার করতে চাইছে। আর সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে বলে।

স্বাভাবিকভাবে প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাওয়ার বিষয়টি মানুষের বাসা-বাড়িতে গিয়েই হয়। আর এদিকে থেকে নারীরা অনেক এগিয়ে। কেননা একজন নারী খুব সহজেই একটি বাসায় প্রবেশ করতে পারেন। অন্যদিকে নারী সদস্যদের পুলিশি হয়রানিতে পড়ার ঝুঁকি নেই বললেই চলে। এ কারণে এবারের সিটি নির্বাচনে জামায়াতের পুরুষ সদস্যদের চেয়ে নারী সদস্যরাই মাঠ পর্যায়ে বেশি ভূমিকা পালন করবেন বলে নিশ্চিত করেছে সূত্র।

নারী সদস্যদের কাজ করার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জামায়াতের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাকা মহানগ কমিটির এক নেতার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতা বলেন, এছাড়া (জামায়াতের নারী সদস্যদের নির্বাচনী প্রচারকাজে নামানো) আর তো কোনো উপায় নেই। কারণ জামায়াতের পুরুষ সদস্যদের নামে হাজার হাজার মামলা রয়েছে। এসব মামলার সবক’টি মিথ্যা ও বানোয়াট ।কিন্ত কী আর করার আছে! মামলা যেহেতু আছে তাই এখন হিসেব করেই চলতে হয়। এদিকে সরকার তিন সিটির নির্বাচনও দিয়ে দিল। জোট বা দলের প্রার্থীদের জন্য যে আগের মতো সর্ব শক্তি নিয়ে মাঠে নেমে কাজ করবো সেটাতো আর হচ্ছে না। তাই হয়তো দল এই ধরনের স্ট্র্যাটিজি নিয়েছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম