রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ভ্যাটের ক্ষেত্রে একটি স্তরই থাকবে

ভ্যাটের ক্ষেত্রে একটি স্তরই থাকবে

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন ব্যবসায়ীদের জন্য এক স্তরের ভ্যাট আইন হবে। আবার ব্যবসায়ী নেতা কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ দাবি জানালেন ব্যবসায়ীদের জন্য এক স্তরের নয় চাই বহু স্তরের ভ্যাট প্রথা।

বুধবার রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত মূল্য ‘সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২, করদাতা উদ্বুদ্ধকরণ’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী মুহিত ও বিশেষ অতিথি ফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম এসব কথা বলেন।

সূত্র জানায়, একই সভায় দুই নেতা দুই ধরণের বক্তৃতা দিয়ে ধন্দে ফেলে দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের। এ তর্ক দুই নেতার মধ্যে আপাতত কোনোরকম দ্বন্দ্ব তৈরী না করলেও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ব্যবসয়ীদের জন্য বহুস্তরের ভ্যাট আইনের দাবি করে বলেন, ‘সব ব্যবসায়ীর পক্ষে ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করা সম্ভব হয় না। আমাদের মত যারা তাদের ক্ষেত্রে হয়তো এ ভ্যাট কোনো ব্যাপার না কিন্ত যারা গ্রামের মুদি বা গুড়ের ব্যবসায়ী বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী- তাদের পক্ষে নিয়মিত হিসেব রাখা ও ভ্যাট পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া সবাই শিক্ষিতও নয়। তাই ভ্যাটের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী ভেদে বিভিন্ন স্তর চালু করা উচিত।’

ব্যবসায়ীদের ভ্যাট পরিশোধ সহজতর করতে আগামী ২ বা ৩ বাজেটে এ সংক্রান্ত আইনকে সমন্বয়ের দাবি করেন তিনি।

আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘সবার সুবিধার জন্যই মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের ক্ষেত্রে একটি স্তর চালু থাকবে। এটি কার্যকর করতে ব্যবসায়ীসহ করদাতাদের পরামর্শের আলোকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে সব পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট চালু আছে। সব দেশে ভ্যাটের পরিমাণ এক রকম না হলেও একটি স্তরই চালু আছে। তাই ভ্যাটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পণ্যে আলাদা কিংবা ব্যবসায়ের ওপর নির্ভর করে আলাদা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ করার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।
তাই সারাবিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে ভ্যাট এক স্তরেই রাখা হবে। তবে এটি কার্যকর করতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ নেয়া হবে।’

এম এ মুহিত বলেন, ‘বর্তমানে রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে বড় খাত হলো আয়কর। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শুল্ক বা আমদানি রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক। ভবিষ্যতে শুল্কের পরিবর্তে ভ্যাটকেই দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে আসা হবে। মানুষকে ভ্যাটের বিষয়ে সঠিক ধারণা ও সচেতন করতে পারলে তা দ্রূতই সম্ভব হবে।’

টার্নওভার কর সম্পর্কে অর্থমস্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে টার্নওভার ২৪ লাখের নিচে হলে কোনো কর দিতে হয় না। এটা বাড়িয়ে ৩০ লাখের বেশি করা হবে। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি ৩৬ লাখ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কর দেয়ার প্রবণতা কম। বর্তমানে মোট জাতীয় আয়ের ১১ থেকে ১২ শতাংশ আসে আয়কর থেকে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশে আয়কর আদায়ের হার জাতীয় আয়ের ১৫ শতাংশের ওপরে।’

বাজেটের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারে বাজেট ছিল ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থ-বছরে তা আড়াই লাখ কোটি টাকায় দাড়িঁয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে তা ৫ লাখ কোটি টাকা হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন এনবিআরের সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, ভ্যাট অনলাইন প্রজেক্ট ম্যানেজার রেজাউল হাসানসহ এনবিআর ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।