শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > পোস্টার-ব্যানারে ডিজিটাল নেতা!

পোস্টার-ব্যানারে ডিজিটাল নেতা!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঝিনাইদহ: মাঠে রাজনীতি করতে হলে চাই ডিজিটাল পোস্টার ও ব্যানার। এমনই দেখা যাচেছ ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে। মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় না হয়ে, নেতাকর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে পোস্টার আর ব্যানারে। আর এটাই যেন নেতা হওয়ার সহজ পদ্ধতি।

ঝিনাইদহের শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলেও লেগেছে ডিজিটালের ছোঁয়া। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অল্প খরচে খুব সহজে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের প্রচারণা চলছে সবখানে। শহর থেকে শুরু করে গ্রামঞ্চলেও জনগণের মধ্যে নিজেকে নেতা হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। শহর কিংবা গ্রামের ছোট বড় বাজার, ব্যস্ততম এলাকা, আবাসিক এলাকা এমনকি অলিতে-গলিতে তাকালে নজরে আসে নেতাদের নানা শুভেচ্ছা বাণী ও ছবি সম্বলিত রঙ বেরঙের ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন বিলবোর্ড। এসবের মাধ্যমেই নেতারা নিজের পরিচয় জাহির করাচ্ছে জনগণের মাঝে।

ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের কল্যাণে নেতা চেনা যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি রাজনৈতিক নেতাদের পরিশ্রম কমেছে পূর্বের তুলনায় কয়েকগুণ। আগে নেতাদের গায়ের ঘাম ঝরিয়ে বিভিন্ন সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে নিজের পরিচিতি ছড়াতে হতো। আবার সে সময় নেতাদের পরিচিতি পেত সাধারণ মানুষের সেবার মাধ্যমে। সমাজের প্রত্যাশা পূরণে তাদের ছুটতে হতো জনগণের দ্বারে দ্বারে।

পোস্টার০০ পোস্টার-ব্যানারে ডিজিটাল নেতা!

তখনকার দিনে নেতার মানের পরিমাপ করা হতো সমাজ সেবা তথা জনগণের সঙ্গে নেতার সম্পৃক্ততা দেখে। নেতার সেই সংজ্ঞা এখন পাল্টে দিচ্ছে ডিজিটাল ব্যানার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড। অনেকে এসকল নেতাদের ডিজিটাল নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে। সত্যিকার নেতা না হয়ে ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে নেতা সাজার হীন প্রবণতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রকৃত রাজনৈতিক নেতারা।

এদিকে ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রচারণা চালানোয় ব্যবসা ভালো হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইনার, প্রেস মালিকদের এমনটাই আশা করছেন এর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

কালীগঞ্জের ড্যাফোডিল কম্পিউটারের মালিক ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার হাসানুজ্জামান মিথুন জানান, আগের তুলনায় এখন আমাদের কাজ অনেক বেশি। কাজের জন্য ভোটের দিকে আমাদের তাকিয়ে থাকা লাগতো কিন্তু এখন সারাবছরই আমাদের কাজের চাপ থাকে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অগবন্নিয়ারের মতে, যে কোনো পরিস্থিতিতে যে ব্যক্তি ধারাবাহিকভাবে সফল হওয়ার ক্ষমতা রাখেন এবং কোনো সংজ্ঞা বা সমাজের প্রত্যাশা পূরণকারী হিসেবে স্বীকৃতি পান, তিনিই নেতা। বর্তমানে অগবন্নিয়ারের নেতারা সংজ্ঞাকে সেকালের ভেবে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করেছেন ডিজিটাল নেতারা। সমাজের প্রত্যাশাপূরণে নেতাদের মধ্যে তেমন কোনো ভাবনার প্রতিফলন দেখা যায় না। বরং প্রত্যাশা পূরণে অর্থ ও শ্রম ব্যয় না করে রঙবেরঙের ব্যানার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড দিয়ে সহজে ও স্বল্প খরচে নেতা হওয়ার প্রচেষ্টায় মেতে থাকতে দেখা যায় তাদের। এমন অভিমত প্রকাশ করেন কয়েক জন রাজনীতিবীদ।

চড়ংঃবৎ০০০০ পোস্টার-ব্যানারে ডিজিটাল নেতা!

নেতার মানের পরিমাপ

বর্তমান সময়ে ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড দেখে নেতার মানের পরিমাপ করা যায়। কয়েকজন নবীন রাজনীতিবীদের সঙ্গে আলাপ করে বর্তমানে নেতা পরিমাপের কিছু তথ্য জানা যায়। তা হলো-ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড যদি স্থানীয় নেতার সঙ্গে নিজের ছবি থাকে তাহলে বুঝতে হবে তিনি ছোট মাপের নেতা। যদি স্থানীয় নেতার সঙ্গে জেলা নেতার ছবি থাকে তাহলে তিনি আর একটু বড় মাপের নেতা। জেলা নেতা বাদে যদি আঞ্চলিক কেন্দ্রীয় বড় নেতার সঙ্গে ছবি থাকে তবে তিনি আরেকটু বড় মাপের নেতা। এভাবেই চলছে ডিজিটাল নেতা হবার প্রক্রিয়া।

প্রবীণ রাজনীতিবীদের বক্তব্য

এ ব্যাপারে সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমানে মূলদলের নেতৃত্বে আছেন এমন দুই একজন নেতার সঙ্গে কথা হয়। তাদের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা, কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হাসান বলেন, আমরা ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছি। সাধারণ ছাত্ররা সমস্যা সমাধানে আমাদের শরণাপন্ন হতো। তাদের সমস্যা সমাধানে নিরন্তর চেষ্টা করতাম। বৃহত্তর আন্দোলনে এসে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। সমাজের সমাধান ও উন্নতি কল্পে কাজ করেছি।

তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ সমস্যা সমাধানে আমাদের সহযোগিতা নিতো। তারা আমাদের ত্রাণকর্তা ভাবতো। এখনকার নেতাদের অনেকের মাঝে এসব অনুপস্থিত। সবাই এখন পোস্টার, ব্যানারের রাজনীতি করছে বলে আমি মনে করি। বাংলামেইল২৪ডটকম