শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > মমতার কাছে ১৮০ বাংলাদেশি জঙ্গির তালিকা হস্তান্তর

মমতার কাছে ১৮০ বাংলাদেশি জঙ্গির তালিকা হস্তান্তর

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকা ‘১৮০ বাংলাদেশি জঙ্গি’র তালিকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। সোমবার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে দোভাল এই তালিকা দেন। ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস সোমবার এ খবর প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছর জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) কীভাবে পশ্চিমবঙ্গকে তাদের ‘নিরাপদ স্বর্গ’ হিসেবে গড়ে তুলেছে, মমতার সঙ্গে বৈঠকে দোভাল ও ভারতের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা সেই বর্ণনা দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এক সূত্র জানায়, এ সময় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পশ্চিমবঙ্গের অনিবন্ধিত মাদ্রাসার তালিকা তুলে দেয়া হয়। এসব মাদ্রাসাকে ‘জঙ্গি তৈরির আস্তানা’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা জলপাইগুড়ি জঙ্গি তৈরির একটা বড় ঘাঁটি, এমনটাই দোভাল জানান মুখ্যমন্ত্রীকে।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসেন অজিত দোভাল।
রাজধানী নয়া দিল্লি থেকে সোমবার সকালে কলকাতায় পৌঁছে দোভাল সোজা চলে যান বর্ধমানের বিস্ফোরণস্থল খাগড়াগড়ে। এরপর তিনি রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনএসজি) মহাপরিচালক জয়ন্ত নারায়ণ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) মহাপরিচালক শরদ কুমার, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাপ্রধান (আইবি) আসিফ ইব্রাহিম, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সচিব প্রকাশ মিশ্র প্রমুখ।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণে কেন্দ্রীয় তদন্তের প্রথমে বিরোধিতা করলেও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর অনেকটাই সুর নরম করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং রাজ্যের জঙ্গি কার্যকলাপের ‘বাসা’ ভাঙতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিলেন মমতা।
বৈঠক শেষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সদর্থক হয়েছে। এই মামলার তদন্তে কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় সব রকম সাহায্য করবে রাজ্য পুলিশ। সন্ত্রাসবাদ রুখতে কেন্দ্র-রাজ্য মিলে কাজ করবে। খাগড়াগড় কাণ্ড ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দোভালের বৈঠকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়েও কথা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দোভালের আসা নিয়ে গত দু-দিন ধরে লাগাতার আলোচনা করেছেন নবান্নের কর্তারা৷ কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গি দমনে একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রাক্তন অধিকর্তা দোভাল৷ ১৯৯৯ সালে কান্দাহারে আইসি-৮১৪ বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্য ভূমিকা ছিল তারই৷ দেশের জঙ্গি কার্যকলাপ সম্পর্কে তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বর্ধমানের জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভাঙতে কাজে লাগাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার৷ তবে এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের মতামত অন্য রকম৷ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা মনে করছেন, বর্ধমানের বিস্ফোরণ কাণ্ড এবং এ পর্যন্ত তদন্তে জঙ্গি জালের যে হদিশ মিলেছে তাতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মতো হাইপ্রোফাইল আমলার ছুটে আসার মতো কিছু ঘটেনি৷ দেশে এর চেয়েও ভয়ঙ্কর ঘটনায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ঘটনাস্থলে যাওয়ার নজির নেই৷
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে দোভাল বা অন্য তিনটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কোনো কর্মকর্তা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি।
বৈঠক শেষে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সচিব প্রকাশ মিশ্র সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, বর্ধমান বিস্ফোরণ ও রাজ্যের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনা তদন্তে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কেন্দ্র এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তাই সন্ত্রাস মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে কাজ করবে।
২ অক্টোবর বর্ধমান শহরের তিন কিলোমিটার দূরে খাগড়াগড়ে এক বিস্ফোরণে মারা যান দুজন। এরা হলেন শাকিল আহমেদ ওরফে শাকিল গাজী ও সুবহান মণ্ডল। আহত হন আবদুল হাকিম নামে আরও একজন। পুলিশের দাবি, নিহত দুই ব্যক্তি জেএমবির সদস্য। বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম ডেস্ক