রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > প্রশাসনে দলবাজি কাম্য নয়

প্রশাসনে দলবাজি কাম্য নয়

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা: সরকারের রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রশাসনের হাতে। প্রশাসনের কর্মদক্ষতার ওপর যে কোনো সরকারের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভরশীল। যে কারণে প্রতিটি সরকার ক্ষমতায় এসে নিজেদের মতো করে প্রশাসন সাজানোর উদ্যোগ নেয়। এ উদ্যোগ সরকারের রুটিন কাজের অংশ হিসেবে বিবেচিত। তবে প্রশাসন সাজানোর নামে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের একাংশের প্রতি পক্ষপাতিত্ব এবং অন্য অংশের প্রতি উপেক্ষা গত দুই যুগের প্রতিটি সরকারের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অকাম্য অবস্থা প্রশাসনকে রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত করে ফেলছে।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের আনুগত্য প্রজাতন্ত্রের বদলে বিশেষ দল অভিমুখী হয়ে পড়ছে। প্রশাসনের যোগ্য, দক্ষ এবং নিবেদিতপ্রাণরা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হচ্ছেন। কারণ যারা কাজের লোক, সততা যাদের চরিত্রের অংশ তারা তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের বদলে কারও তোষামোদ বা দলবাজি করাকে সম্মানজনক মনে করেন না। নব্বইয়ের মহান গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা হলেও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অভাব এবং সর্বক্ষেত্রে দলবাজির প্রবণতা প্রশাসনকে কলুষিত করে তুলেছে।
জনপ্রশাসন প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনের মর্যাদা হারিয়ে দলীয় অবয়বে আবির্ভূত হচ্ছে। ফলে প্রতিটি সরকারের আমলে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে ওএসডি হয়ে থাকতে হচ্ছে। প্রজাতন্ত্রের সেবার বদলে তারা বঞ্চিত হওয়ার বিড়ম্বনায় ভুগছেন। অযোগ্য, তোষামোদকারী এবং দলবাজরা পদোন্নতির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়ায় প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়নের বদলে তোষামোদকারীরা তোষামোদ নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। যোগ্যতা, দক্ষতা, রাজনীতি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি ও পেশাদারিত্ব উপেক্ষিত হওয়ায় প্রশাসন কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার হলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তা হোঁচট খাচ্ছে। আমরা মনে করি জনপ্রশাসনকে প্রজাতন্ত্রের প্রশাসন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বার্থে দলবাজির অবসান হওয়া উচিত। জনপ্রশাসনের ক্যাডাররা ব্যক্তিগতভাবে কোনো দল বা বিশেষ মতাদর্শকে ভালোবাসতেই পারেন।
কিন্তু প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে, জনগণের সেবক হিসেবে তাদের আনুগত্য থাকতে হবে সংবিধান ও প্রজাতন্ত্রের আইনের প্রতি। এক্ষেত্রে কোনো দলীয় মনোভাবই কাঙ্ক্ষিত নয়।