শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ৭ খুনের হুকুমদাতা নূর না শামীম ওসমান?

৭ খুনের হুকুমদাতা নূর না শামীম ওসমান?

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার হওয়া হত্যাকারীরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও খুনের নির্দেশদাতা শামীম ওসমান নাকি সন্ত্রাসী নূর হোসেন তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।

সোমবার সাত খুনের বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে মুঠোফোনে শহীদুল ইসলাম এ প্রশ্ন তুলে বাংলামেইলকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের সহযোগিতায় সাত খুনের বিচার দাবির আন্দোলন চাঙা হয়েছে। যার ফলে আমরা জানতে পেরেছি কারা খুন করেছে।’

তিনি হত্যাকাণ্ডের মূল নায়কের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তবে এখন পর্যন্ত জানতে পারলাম না হত্যাকাণ্ডের হুকুমদাতা কে ছিলেন, গডফাদার শামীম ওসমান নাকি সন্ত্রাসী নূর হোসেন?’

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। পরদিন ২৮ এপ্রিল কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অপর আসামিরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, হাসমত আলী হাসু, আনোয়ার হোসেন আশিক, আমিনুল ইসলাম রাজু ও ইকবাল হোসেন।

গত ৩০ এপ্রিল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অপহৃত ৬ জন ও পরদিন ১ মে সকালে অপর অপহৃদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এরপর ৪ মে নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে বসে সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগ তোলেন ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাব সাতজনকে হত্যার করেছে। এ সময় শহীদুল ইসলামের সঙ্গে রাইফেল ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। ওই সময় শহীদুল ইসলাম বলেছিলেন আমার নেতা শামীম ওসমান এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। একটি চক্র তাকে এ ঘটনায় জড়াতে চাইছে।

ওই দিন বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় খুনীদের গ্রেপ্তার দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান বলেছিলেন, ‘শামীম ওসমান কাউরে কেয়ার করে না। গুণ্ডাপাণ্ডা শায়েস্তা করতে আমি একাই যথেষ্ট।’

তবে তিনি স্বীকার করেন প্রশাসনের সব জায়গায় যোগাযোগ করেও অপহৃত নজরুলসহ অন্যদের বাঁচাতে পারেননি। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘নজরুলের অপহরণের পর খবরটি র‌্যাব কর্মকর্তাদের জানিয়ে যখন তাদের উদ্ধারের আবেদন জানাই, তখন তারা হাসাহাসি করেন। পরে র‌্যাবের সিওকে জানালে তিনি তাদের উদ্ধারের আশ্বাস দেন।’ নজরুলসহ সাতজনের অপহরণের পর তাদের মুক্তির জন্য যা যা করার সব করেছেন দাবি করে শামীম ওসমান বলেছিলেন, ‘আমি চেয়েছি অন্তত লোকগুলো বেঁচে থাকুক। আমি ভিক্ষা চেয়েও পাইনি। আমি ক্লান্ত।’

সাত খুনের আগে পরের এসব ঘটনা উল্লেখ করে নিহত নজরুলের শ্বশুর এবার নতুন করে প্রশ্ন তুললেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে একসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। এরপর ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন পরদিন অপর জনের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার হয়। নিহতদের পেটে ছিল আঘাতের চিহ্ন। প্রতিটি লাশ ইটভর্তি দুটি করে বস্তা বেঁধে ডুবিয়ে দেয়া ছিল।

আলোচিত এ খুনের ঘটনায় র‌্যাবে চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম এম রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সাত খুনের দায় স্বীকার করেন। এছাড়া কামাল নামের এক ব্যক্তি রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। রিমান্ডে তিনি স্বীকার করেন, সাত খুনের পর নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে যান। এছাড়া এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে নূর হোসেনের একটি ফোনালাপের অডিও প্রকাশ পায়। বাংলামেইল২৪ডটকম