শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > অনেক বড় জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, বললেন প্রধানমন্ত্রী

অনেক বড় জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, বললেন প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ মানুষের কল্যাণে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

রোববার সন্ধ্যায় ধানমণ্ডি-৩২ নম্বরে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

জাতীয় শোকের মাস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে কৃষকলীগ এ আলোচনা সভা ও রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বড় বড় জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। লাখো শহীদের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি এটাই তার প্রমাণ। বঙ্গবন্ধু তোমাকে কথা দিলাম সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবো।

তিনি বলেন, মহান অর্জনের জন্য মহান ত্যাগের প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু সে ত্যাগ করে গেছেন। আমিও প্রস্তুত আছি। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাও বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে।

স্বাধীনতা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র চলছেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাইনাস-টু ফর্মুলা দেখেছি। এছাড়াও অনেকবার আমি মৃত্যুকে সামনে দেখেছি। আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার তো এখন আর হারাবার কিছু নেই। বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খা পূরণে, বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি।

দেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে বলেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে পারছি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীকে বেঈমান আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পায়ে গুলি লেগেছিল। বঙ্গবন্ধু জার্মানি পাঠিয়ে তার চিকিৎসা করিয়েছিলেন। কিন্তু বেঈমান চিরকাল বেঈমানই থাকে। বিএনপির এ শমসের মবিনই জিয়ার নির্দেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, বেঈমান বেঈমানই। মীর জাফর তিন মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, বেঈমান মোস্তাকও তিন মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।

বঙ্গবন্ধুর ওই খুনীদের আবারও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে আলোচনা সভায় জানান প্রধানমন্ত্রী।

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, বাংলাদেশকে মুক্ত করাই যেন বঙ্গবন্ধুর অপরাধ ছিলো। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধস্ত দেশটাকে গড়ে তুলছেন। ঠিক তখনই ৭১’এর পরাজিত শক্তির দোসররা তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে ৭৫‘এর বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।

তিনি আরো বলেন, পরাজিত শক্তির দোসরদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায় যখন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার না করে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়, দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়। খুনীদের পুরস্কৃত করা হয।

১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান তাকে দেশে আসতে বাধা দিয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি মৃত্যুকে পরোয়া করি না। তাই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরে আসি। ক্ষুধা, দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ফিরে আসি।

৭৫’র ১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাফ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি ছিলাম দেশের বাইরে স্বামীর কর্মস্থলে। ঘরভর্তি মানুষ রেখে বিদায় নিয়েছিলাম। কিন্তু ফিরে এসে বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বজনদের কাউকে খুঁজে পাইনি। পেয়েছি এদেশের মানুষের ভালোবাসা।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ একজনের শোক সইতে পারে না। আমি আর রেহানার কথা ভাবেন। আমরা শোকে কাতর হয়েছি। কিন্তু ভেঙে পড়িনি। শুধু একটা জিনিস ভেবেছি যাদের মুক্তির জন্য বাবা-মা সবাই আত্মত্যাগ করে গেছে তাদের মুক্ত করতে হবে।

অশ্রুসিক্ত প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বলেন, এই বাড়িতে আমরা মিলাদ পড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু জিয়া অনুমতি দেয়নি। রাস্তার ওপর মিলাদ পড়েছি। এটা বাস্তব সত্য কথা। লাখো শহীদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসেনি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

বক্তব্য শেষে রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা, সহসভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।