শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > টঙ্গীতে ধর্ষণের অভিযোগ সাজিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে শূলে চড়ায়!

টঙ্গীতে ধর্ষণের অভিযোগ সাজিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে শূলে চড়ায়!

শেয়ার করুন

এম. নজরুল ইসলাম আজহার ॥
টঙ্গী থানার শিলমুন পশ্চিম পাড়া এলাকায় তিন কিশোরীকে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল এবং সাংবাদিক মিলে ব্লাকমেইল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের স্বীকারোক্তি নিয়ে ভিডিও ফুটেজ তৈরি করে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ কর হয়। ওইতিন কিশোরী টঙ্গীর শিলমুন পশ্চিম পাড়া এলাকার রাত্রি (১৪), জান্নাত আক্তার (১৩) ও সুবর্ণা (১০)। তাদেরকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে ওই ভিডিও ফুটেজ তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
গত ২৬ মে গাজীপুরের একটি স্থানীয় দৈনিকে ‘প্রভাব খাটিয়ে একাধিক কিশোরীকে ধর্ষনের অভিযোগ’ সাবহেড লাইন ‘টঙ্গীর দ্বিতীয় রসুখাঁ, কে এই মুজিবর?’ শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়।
এ সংবাদের সূত্র ধরে গত ৫ জুন বুধবার দুপুরে সরেজমিনে ঘটনা স্থলে যাওয়া হয়। ওইতিন কিশোরী রাত্রি (১৪), জান্নাত আক্তার (১৩) ও সুবর্ণা (১০) এবং তাদের পিতামাতা ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে সংবাদটির উপর সম্পূর্ণ ধারণা পাল্টে যায়। তারা সকলেই নাম না জানা কয়েকজন সাংবাদিক ও এলাকার কুচক্রী মহলে সদস্য আফাজ উদ্দিনগংদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান। এলাকাবাসী জানান, ধষর্ণের মতো এতো বড় ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশের পূর্বে কেউ বলতে পারবেন না। বাস্তরে এ ধরণের কোন ঘটনা এলাকায় ঘটেনি। এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানীকর। স্থানীয় আফাজ উদ্দিন গংদের সাথে আওয়ামীলীগ নেতা মজিবুর রহমানের ১০ বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ওই আক্রোশে ঝাল মিটাতে সাংবাদিক দিয়ে মজিবুর রহমানকে শূলে চড়ানো হয়েছে। তাই নাবালক মেয়েদের দিয়ে ধর্ষণের বুলি শিখিয়ে তাদের স্বীকারোক্তি নিয়ে ভিডিও ফুটেজ তৈরি করেন। এসব কিশোরী বয়সে এতোই আনমেচুইট যে ধর্ষণ কি তারা নিজেরাই জানে না।
স্থানীয় স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া জান্নাত আক্তার (১৩) ও তার মা জানান, ‘তিন সাংবাদিক এসে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলেন, আমরা যা যা বলবো তুমি তা ক্যামেরার সামনে বলবা; তারপর ক্যামেরা অন করা হয়’।
রাত্রি স্কুলে থাকায় তার সাথে কথা হয়নি; তবে তার মা এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘এসব ফাও কথা। আমার মেয়েকে কেউ জোরপূর্বক ধষর্ণ করলে; অন্তত আমি জানতাম। আমার মেয়েকে সাংবাদিকরা ভয় দেখিয়ে বলেন, ওই দ্ইু মেয়েকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে; তুমি বাঁচতে হলে, আমরা যা বলবো তা ক্যামেরার সামনে বলবা’।
ঘরে অসুস্থ সুবর্ণার পিতা। মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। শিশু শ্রমে খাটে সুবর্ণা। এ প্রতিবেদক সুবর্ণাকে বাড়িতে পাননি। সে কাজে গেছে। তবে সুবর্ণার অসুস্থ পিতা ও মার সাথে কথা হয়। সুবর্ণার মা ও বাবা ধর্ষণের বিষয়ে কিছুই জানেন না। সাবর্ণার মা জানান, সুবর্ণাকে ডেকে নেয় বাড়ির মালিক আফাজ উদ্দিন। নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন কথা বলতে। সুবর্ণা মা তার মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা কথা বলানোর জন্য ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান।
জান্নাত আক্তার, রাত্রি, ও সুবর্ণা। এদের পিতা-মাতা খুব নি¤œ আয়ের লোক। তাদের দারিদ্রতাকে পুঁজি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই চক্রটি সাতষট্টি বছর বয়স্ক মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো অভিযোগ কৃত্রিম তৈরি করে কালিমা লেপন করতে দ্বিধা বোধ করেননি।
এমন স্পর্শকাতর সংবাদে পুলিশের কেন সাক্ষাতকার নেয়া হয়নি। তাছাড়া এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর, আইন প্রয়োগকারী বা মানবাধিকার সংস্থাকে সাংবাদিকরা জানানোর প্রয়োজনীয়তা কেন বোধ করেননি?
তবে এমন স্পর্শকাতর সংবাদ পরিবেশ করে আওয়ামীলীগ নেতা মজিবুর রহমানের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছেন তা বলার অবকাশ নেই। তবে এ জাতিয় সাংবাদিকতা একটি সমাজের বিশৃঙ্খলতা ও অশান্তিই ডেনে আনে। এ রকম সাংবাদিকতা কারো কাম্য হতে পারে না।