শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > বিএনপির সঙ্গেই থাকবে জামায়াত

বিএনপির সঙ্গেই থাকবে জামায়াত

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ শিগগিরই জামায়াতকে জোট থেকে ত্যাগ করার কোনো সিদ্ধান্ত বিএনপি নেয়নি। বিএনপি যখন মনে করবে জামায়াতকে জোট থেকে বাদ দেয়া দরকার তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে কারো চাপে বিএনপি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে না। তাই শত সমালোচনার মুখেও বিএনপির সঙ্গেই জোটবদ্ধ থাকছে জামায়াত।

আলাপকালে এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা। এমনকি সরকারের আহ্বানের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও বলেছেন, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্ত বিএনপিই নেবে।

সংলাপের জন্য বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের যে শর্ত সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বেগম জিয়া বলেন, ‘আমরা কার সঙ্গে থাকবো, কার সঙ্গে থাকবো না। সেটা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। জামায়াত তাদের সঙ্গেও ছিল। আর বিএনপি অন্য কারো নির্দেশনায় চলে না। গণতান্ত্রিক ও সমঝোতার রাজনীতিতে যে কেউ থাকতে পারে।’

রাজনৈতিক জোট হিসেবে ২০০১ থেকে বিএনপির সঙ্গে আছে জামায়াত। জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারেও ছিলো তারা। এক-এগারোর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করার পর যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গি দল হিসেবে আখ্যায়িত করে জামায়াতকে। এমনকি জামায়াতকে দল হিসেবে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়াও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় দশম নির্বাচনের আগে, বিশেষ করে নির্বাচনের পরে সংলাপ ও সমঝোতার বিষয়ে শর্ত হিসেবে জামায়াতকে ছাড়ার জন্য বিএনপিকে চাপ দিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ।

এমনকি নির্বাচনের পর আন্তর্জতিক সম্প্রদায়ও বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেয়। এরপরই বিদেশি সাংবাদিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে জামায়াত ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সময় হলেই জামায়াতকে ছাড়া হবে।’ তখন বিএনপির ভেতর থেকেও জামায়াতকে ছাড়ার একটা জোরালো দাবি ওঠে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এককভাবে সমাবেশ করে বিএনপি। সেই সমাবেশে লাখো জনতার উপস্থিতিতে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

আন্তর্জাতিক চাপ, জামায়াত ছাড়ার ইঙ্গিত, এককভাবে কর্মসূচি পালন ও দলীয় চাপের পর মঙ্গলবার জামায়াত প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া দেয়া বক্তব্যে এটা স্পস্ট যে, বিএনপির সঙ্গেই থাকছে জামায়াত।

জামায়াত প্রসঙ্গে আলাপকালে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা বাংলামেইলকে জানান, জামায়াতের বিষয়ে দেশি-বিদেশি চাপ রয়েছে। তবে বিএনপি কারো কাছে মাথা নত করবে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেই দিয়েছেন, বিএনপির সিদ্ধান্ত বিএনপিই নেবে।

নেতারা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে অনেকেই বলে আসছেন জামায়াতকে ছাড়া বিএনপি কোনো কর্মসূচি সফল করতে পারে না, কোনো সমাবেশে লোক সমাগম হয় না। কিন্তু ১৯ তারিখে সোহরওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনসমাগ হয়েছে। তাদের দেখাতেই একা এ কর্মসূচি পালনের কৌশল নেয় বিএনপি।

জামায়াতের প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. অব. মাহবুবুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘জামায়াত না ছাড়লে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা নয়, এটা আওয়ামী লীগের কৌশল। তারা আলোচনা করতে চায় না বলেই এসব কথা বলছে। তারা ভুলে গেছে তারাই একসময় জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেছে। শর্ত দিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। আওয়ামী লীগ আলোচনায় না এলে রাজপথেই এর সমাধান হবে।’

জামায়াত ছাড়ার প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শামসুজ্জামান দুদু বাংলামেইলকে বলেন, ‘এটা বহুবার বলা হয়েছে, বিএনপির বিষয় বিএনপি দেখবে। আওয়ামী লীগের মতো বিএনপি ভারতের দাসত্ব করে না যে কারো কথায় সিদ্ধান্ত নেবে।’

জামায়াত বিএনপির সঙ্গেই আছে এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা নতুন করে বলার কিছু নেই।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক বাংলামেইলকে বলেন, ‘জামায়াত জঙ্গি সংগঠন হলে সরকার কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করছে না। সরকার তো সব পারে, তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দিক। তা না করে তারা বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে বলছে। তারা জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতি করছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন দেশের প্রধান ইস্যু হচ্ছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, জামায়াত নয়।’ বিএনপি শিগগিরই দাবি আদায়ে আন্দোলনে যাবে বলে জানান তিনি। বাংলামেইল