মঙ্গলবার , ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > সেবাপ্রার্থীদের হয়রানীর অভিযোগ, টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলে ঘুষ না দিলে মিউটেশন বাতিল

সেবাপ্রার্থীদের হয়রানীর অভিযোগ, টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলে ঘুষ না দিলে মিউটেশন বাতিল

শেয়ার করুন


স্টাফ রিপোর্টার:
গাজীপুর টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল অফিস এর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিরুদ্ধে ঘুষ না দিলে নামজারি (মিউটেশন) আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কাগজপত্র সঠিক থাকলেও মিউটেশন করতে আসা সেবাপ্রার্থীরা ঘুষ না দিলে নানা উছিলায় কিংবা আইনের মারপ্যাচে একই ব্যক্তির আবেদন একাধিকবার বাতিলের নজির সৃষ্টি করেছেন অত্র অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামান্না রহমান জ্যোতি। তাছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বহুদিন ধরে। আওয়ামী সরকারের আমলে তাঁর খুঁটির জোর থাকার কারণে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন নি। তাঁর ইচ্ছে অফিস চালায়। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সিদ্ধহস্তে সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সহযোগি।
ভূমি অফিস ও সেবাপ্রার্থী সূত্রে জানা যায়, দালালদের সাথে কথা বলে চুক্তি না করলে এবং ঘুষ না দিলে করা হয় বিভিন্ন হয়রানি। অথচ এসব অপকর্ম ডাকতে একটি মোবাইল নাম্বার সহ উল্লেখ্য করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের দরজায় লাগানো হয়েছে, ‘সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সাক্ষাৎ প্রাপ্তিতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের কোন বাধা সম্মুখীন হলে নিম্নোক্ত নম্বরের সরাসরি যোগাযোগ করুন’।
এদিকে ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম জানান, জমির নামজারি আবেদনের প্রস্তাব করার পর (নামজারি মামলা নম্বর— ৪৪৬ (IX-1)২০২৪—২৫) গাছা ইউনিয়ন ভূমি অফিস যাচাই—বাছাইয় করে নামজারি আবেদনের ফাইলটি প্রস্তাব দিয়ে টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল ভূমি অফিসে পাঠানো হয়। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামান্না রহমান জ্যোতি কোন কারণ ছাড়াই কাগজের সমস্যা ও ত্রুটি আছে বলে নামজারির খারিজ আবেদন বাতিল করে দেয়।
তিনি আরোও জানান, আমার বাবা তমিজ উদ্দিন গাজীপুর মহানগরের বাদে কলমেশ্বর মৌজার ১৩৩ খতিয়ানের আরএস ৬১২ দাগে ০৮ শতাংশ এবং ৬১৪ দাগে ৩৫ শতাংশ জমি ওয়ারিসি সূত্রে রেকর্ড অনুযায়ী মালিকানা লাভ করি। নিয়ম অনুযায়ী আমি নামজারি (মিউটেশন) আবেদন করি। গাছা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা যাচাই—বাছাই করে প্রস্তাব দিয়ে টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল এর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে পাঠান। পরে কোনোরকম শুনানি ছাড়া মূল দলিলের সদ্যতোলা সার্টিফাইড কপি প্রয়োজন উল্লেখ্য করে নামজারি আবেদনটি বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে অফিস সূত্রে জানতে পারি, অফিসে যোগাযোগ ঘুষের মাধ্যমে চুক্তি না করে এভাবেই আবেদন গুলো বাতিল করা হয়। উল্লেখ্য, পূর্বেও আবেদন করা হয়েছি তাঁর এবং তার ভাইদের নামে, সে গুলোও বাতিল করা হয়েছিল।
তিনি আরোও বলেন, কোনো প্রকার নোটিশ বা শুনানি ব্যতীত নামজারির আবেদনটি বাতিল করার নিয়ম না থাকলেও দালালদের মাধ্যমে ঘুষ না দিলে নামজারির আবেদনের শুনানি না করেই আবেদনটি খারিজ করে দেয় এসিল্যান্ড। এসব হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এই ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা তামান্না রহমান জ্যোতি বলেন, শুনানি ছাড়া নামজারির আবেদন খারিজ করে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। মোবাইলে মেসেজ গিয়েছিল হয়ত তারা খেয়াল করেনি। তাই শুনানির দিন হয়ত তারা উপস্থিত ছিল না। যার কারণে ফাইলটি খারিজ হতে পারে। তবে বিষয়টি আমি পুরোপুরি না দেখে কিছুই বলতে পারব না। ঘুষ ছাড়া এসিল্যান্ড অফিসে কাজ হয় না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানান এই কর্মকর্তা।