কালিয়াকৈর প্রতিনিধি
গাজীপুর: কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে আলামিন হোসেন (২০) নামে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং কামরুল ইসলাম (১৯) নামের দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এরা দুজনই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজ শাখার ছাত্রলীগ নেতা।
নিহত আল আমীন(২০) উপজেলার বরিয়াবহ এলাকার মোতালেব হোসেনের একমাত্র পুত্র। পুত্র হারিয়ে পিতা মোতালেব হোসেন ও নিহত আলামিনের মাতা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের কয়েকজন ছাত্র জানান, বুধবার ৫ জুন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেই অনুষ্ঠানে পৌর ছাত্রলীগ এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ৬ই জুন দুই পক্ষের বিরোধ মীমাংসা করার জন্য সকাল দশটার দিকে সময় নির্ধারণ করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নিহত আলামিন ও কামরুলসহ আরো অনেকেই কলেজের পাশেই মোকদম প্লাজার সামনে আসলে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমন খানের নেতৃত্বে ২০—২৫ জনের একটি দল হকিস্টিক, রামদা, ছুরি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এ সময় আলামিন ও কামরুলকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শী নর সুন্দর রামকৃষ্ণ বলেন, চিৎকারের ডাক শুনে আমি আমার দোকান থেকে বের হতেই আলামিন রক্তাক্ত অবস্থায় আমার উপরে এসে পড়ে যায় এবং সে প্রাণে বাঁচতে গলির ভিতরে দৌড় দিলে সেখানে গিয়ে হামলাকারীরা তাকে উপর্যপরি আঘাত করে। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী পান ব্যবসায়ী শুভ সাহা বলেন ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল হকিস্টিক, রামদা ও ছুরি নিয়ে ধাওয়া করলে ভয়ে আমি দোকান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর বিদায় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গত বুধবার ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারি হয়। ওই মারামারির ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাধান করার কথা ছিল। এরই সূত্র ধরে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসী আহত দুই জন কে উদ্ধার করে কালিয়াকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আলামিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত কামরুল ইসলাম কে গুরুতর অবস্থায় মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)এ এফ এম নাসিম নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।