শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > পূবাইলে ফের কৃষকের জমি দখলের পায়তারা করছেন ভূমিদস্যু কাউন্সিলর

পূবাইলে ফের কৃষকের জমি দখলের পায়তারা করছেন ভূমিদস্যু কাউন্সিলর

শেয়ার করুন

মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার
বিশেষ প্রতিনিধি:
গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের পূবাইলের সরুল গ্রামের এক নিরীহ কৃষকের জমি জবর দখলের অপচেষ্টা করে যাচ্ছেন স্থানীয় ভূমিদস্যু একটি চক্র যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
ভুক্তভোগী ওই গ্রামের মরহুম আব্দুল কুদ্দুস সরকারের পুত্র দলিল উদ্দিন দুলালের অভিযোগ করছেন ভুয়া জমির মালিক সৃজন করে ওই কাউন্সিল এবং তার সাথে স্থানীয় কিছু লাঠিয়াল বাহিনী দুলালের ভোগদখলীয় জমি একাধিকবার দখলে নেয়ার অপচেষ্টা করে আসছেন। সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর দুপুরেও ওই কাউন্সিলর তাঁর দলবল নিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে প্রাণনাশে হুমকি দমকি দিয়ে ফিরে আসেন। এতে করে দুলাল ও তাঁর পরিবারের লোকজন চরম আতংকের মধ্যে দিনযাপন করছেন। এ জমি দখলকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটার আশংকা রয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, দুলালের ক্রয়কৃত ৩৫ শতাংশ ফসলী জমি খাজনা খারিজ করে দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগদখল করে আসছেন। সম্প্রতি ওই গ্রামের মৃত অজিত দাসের পুত্র নিরঞ্জন দাস ও শিবা দাস এবং প্রেমধন্য ওরফে পিটির পুত্র প্রণয় দাস জমিটি পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে দাবি করে আসছেন। তাদের সাথে স্থানীয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলর ও তার লাঠিয়াল দলবল একাট্টা হয়ে বিভিন্ন অপকৌশল করে বিভিন্ন সময় হামকি দামকি দিচ্ছেন জমিটি ছেড়ে দেয়ার জন্যে।
কৃষক দলিল উদ্দিন দুলাল উপায়ান্তর হয়ে গত ১০/২/২০২২ খ্রিস্টাব্দে গাজীপুর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৭/২২নং পিটিশন মোকদ্দমা দায়ের করে ছিলেন। মামলার তোয়াক্কা না করে তারা জমিটি দখলের নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখলে পূণরায় গত ১৬/১১/২০২৩ খ্রিস্টাব্দে গাজীপুর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০৬১/২৩নং পিটিশন মোকদ্দমা দায়ের করেন। বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নালিশী জমির দখলীয় প্রতিবেদন দিতে গাজীপুর সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এবং পূবাইল থানার ওসিকে নালিশী জমিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায়া রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এসএ রেকর্ডীয় জমির মালিক অজিত কুমার দাস এবং তার ভাই দিনেশ চন্দ্র দাস ও দিরেণ চন্দ্র দাসের নিকট থেকে প্রায় ৫০ বছর পূর্বে স্থানীয় বরত মোহন দাস ক্রয় করে ভোগদখল করে পরবর্তীতে ওই জমিটি বিক্রি করে দেন স্থানীয় মোঃ মিয়া আলী, মোঃ ইসলাম আলী ও চাঁন মিয়ার নিকট। তাঁরা খরিদাসূত্রে মালিক হয়ে আরএস খতিয়ান ৪ এবং আরএস দাগ ৫৮২, ৫৮৩ এতে ভোগ দখলে নিয়োজিত থাকেন এবং উভয়েই ২০০১ সালে ১৪৯৫৫নং দলিল মূলে দলিল উদ্দিন ওরফে দুলালের নিকট বিক্রি করে। তৃতীয় ক্রেতা দুলাল ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে যাহার এসএ দাগ ১৫৯ আরএস দাগ ৫৮৩ উহার কাতে সাড়ে ১৯ শতাংশ এবং একাধিক দলিলে অপর ৩৫ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে খাজনা খারিজ করে ভোগ দখলে রয়েছেন।
ফরায়েজ মূলে অজিত কুমার দাস পৈত্রিকসূত্রে জমির মালিক হন ২২ বিঘা। অতচ অজিতের জীবদ্দশায় দলিলমূলে ২৬ বিঘা জমি বিক্রি করে নিঃশর্তবান হয়েছেন। দলিল মূলে অতিরিক্ত জমি ৪ বিঘা বিক্রি করে যান।
বর্তমানে অজিত কুমার দাসের দুইপুত্র নিরঞ্জন দাস ও শিবা দাস পিতার সম্পত্তির রেকডীয় মালিকানা দাবী করে এসব জমি দখল করে বেচা বিক্রির পায়তারা করছেন এবং পিতার বিক্রিত জমির মালিকা অস্বীকার করছেন। পাশাপাশি পিতার নামে এসএ রেকর্ডীয় মালিকানা দেখিয়ে কিছু জমির ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে গোপনে ভূমি অফিস থেকে নামজারী জমাভাগ (খারিজ) করেন অজিত কুমার দাসের দুইপুত্র। পরবর্তীতে জানতে পেরে দুলাল ওই নামজারীর বিরুদ্ধে মিস কেইস মোকদ্দমা দায়ের করেন। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।
অপরদিকে স্থানীয় কাজী ফারহান ইসলাম গত ৩০/০১/২০২২ খ্রিস্টাব্দে গাজীপুরের টঙ্গী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ২১১২/২২নং দলিল মূলে ১৯ শতাংশ জমি অন্যত্রে বিক্রি করে নিঃশর্তবান হয়েছেন। ওই কাজী ফারহান ইসলাম বর্তমানে নিরাঞ্জন গংদের সাথে একাট্টা হয়ে দুলালের জমি জবর দখলের চেষ্টা করছেন।
এদিকে চতুরবাজ নিরাঞ্জন গংরা সংশ্লিষ্ট আইন আদালতের কোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমি খেকো, লাঠিয়াল ও হারমাইদ প্রকৃতির অসৎ লোকজনের উপর ভর করে দুলালের দখলীয় জমি বেদখল করে বেচা-বিক্রির অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।