শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > গাজীপুর মহাসড়কের ফুটপাতে পুলিশের চাঁদাবাজি অব্যাহত ॥ সাংবাদিক লাঞ্চিত

গাজীপুর মহাসড়কের ফুটপাতে পুলিশের চাঁদাবাজি অব্যাহত ॥ সাংবাদিক লাঞ্চিত

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গাজীপুর মহানগরের ফুটপাতের দোকানীদের কাছে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যাপক ভাবে চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
গত ২৬ জানুয়ারি সাপ্তাহিক বাংলাভূমি পত্রিকায় লিড নিউজ ‘পুলিশ ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজী করছে মাসে সাড়ে ৩ লাখ’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গত ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর পুলিশের সোর্স ফুটপাত থেকে চাঁদা উত্তোলনকারী মোস্তফা মহানগরের মালেকের বাড়ি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওভারব্রীজের নিচে বাংলাভূমি’র স্টাফ রিপোর্টার জাহিদ হাসান জিহাদকে আটক করে লাঞ্চিত করে। সংবাদ প্রকাশের পরও মোস্তফা ফের ফুটপাত থেকে চাঁদা উত্তোলনের সময় সাংবাদিক ছবি তোলতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁর ক্যামেরা ভাংচুর করে বলে সাংবাদিকের অভিযোগ।
ঘটনার প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান, গত ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার পর মালেকের বাড়ী ওভারব্রীজ সংলগ্ন মহাসড়ক দখলকৃত প্রায় ১৫০ কাঁচা তরিকরকারির দোকান রয়েছে। প্রতিদিনের মত মোস্তফা তার লোকজনসহ দোকানদারদের কাজ থেকে চাঁদা তোলছিল এসময় সাংবাদিক জাহিদ চাঁদা তোলার দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করেন। মোস্তফা টের পেয়ে তার লোকজন নিয়ে সাংবাদিককে আক্রমণ করে, তাকে আটক করে এবং ক্যামেরাটি ভেঙ্গে ফেলে।
তাঁরা আরো জানান এ সময় মোস্তফা দম্ভোত্তি করে বলেন, ‘তোর এত বড় সাহস তুই আমার নামে পত্রিকায় চাঁদাবাজির খবর লিখিস! পুলিশ পকেটে রেখে আমি চাঁদাবাজি করি’ এ বলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে থাকে।
আটকের বিষয়টি সাথে সাথে গাজীপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেনকে জানানো হলে তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান। বাস্তবে সাংবাদিক আটক কিংবা উদ্ধারে পুলিশের কোন ভূমিকা পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হস্তক্ষেপে সাংবাদিক জিহাদ উদ্ধার হয়।
সাংবাদিক আটকের খবর পেয়ে বাংলাভূমি পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং গাজীপুর রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজহার, বিজয় টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি ও গাজীপুর রিপোর্টার্স ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি এমএ কাশেম, গাজীপুর রিপোর্টার্স ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আঃ হান্নান মোল্লা, ক্রাইমবাংলাডটকম’র বার্তা সম্পাদক তুহিন সারোয়ার, সাংবাদিক আজিজসহ অন্যান্য মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
অনেক সাংবাদিক জড়ো হওয়া দেখে ফুটপাতের ব্যবসায়িরা ভীড় জমায়। তাদের অভিযোগ, দোকান প্রতি ৪০ টাকা করে মোস্তফাকে না দিলে স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশ তাদের ফুটপাতে ব্যবসা করতে দেয় না। তাই বাধ্য হয়ে চাঁদা দিতে হয়।
এ সময় ভোগড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ নাজমুলকে চাঁদা উত্তোলনে নিয়োগ করা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কুত্তার বাচ্চা(মোস্তফা)কে পরশুদিন না করে দিয়েছি; চাঁদা না তোলতে। আর আমি গতকাল(২৯ জানুয়ারি) বদলী হয়ে জয়দেবপুর থানায় চলে এসেছি। বর্তমান ফাঁড়ি ইনচার্জ এনামুল হককে বলুন’।
সরেজমিনে দেখা যায় যে, মহাসড়ক দখল করে গড়ে উঠা কাঁচা বাজারটির কারণে সাধারন পথচারী এবং যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। একদিকে কাঁচাবাজার অপরদিকে রিক্সা দাঁড়ানো বাসযাত্রীদের উঠা-নামায় মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ওইদিনই ঘটনাস্থল থেকে ফিরে বিষয়টি স্থানীয় ফাঁড়ি ইনচার্জ এনামুল হককে জানানো হলে তিনি মোস্তফার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সর্বশেষ সংবাদে জানা যায়, এ ঘটনার পরদিন (৩১ জানুয়ারি) মোস্তফা অন্যান্য দিনের ন্যায় ওই ফুটপাত থেকে চাঁদা উত্তোলন করা অব্যাহত রেখে।
এ ঘটনায় গাজীপুরের বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছেন।