শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > আগামী বছরের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনিশ্চিত

আগামী বছরের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনিশ্চিত

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ আগামী বছর (২০১৫) ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা কোথায় হবে তা কারো জানা নেই। মেলার বর্তমান জায়গাটি সচিবালয় তৈরির জন্য বরাদ্দ রয়েছে। গত অর্থবছরে সচিবালয় তৈরির কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন কারণে তা শুরু হয়নি। এবার শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে। ফলে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।

তবে ইপিবি ও ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মেলার জন্য স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের পক্ষে। এজন্য প্রয়োজন বড় জায়গা। স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গন না থাকায় প্রতিবছর প্রচুর অর্থ অপচয় হচ্ছে ব্যবসায়ী ও আয়োজক সংস্থা ইপিবির। প্রতিবছর অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয় ও অপচয় কমছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

গতবছর সচিবালয় নির্মাণের জন্য ১৩শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানায় ইপিবি। সচিবালয় তৈরির কথা শুনে মেলার আয়োজক সংস্থা ১৯তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা করার জন্য বিকল্প জায়গা খোঁজা শুরু করে। বর্তমানে নতুন সরকার সচিবালয় নির্মাণের কাজ শুরু করলে বর্তমান মেলা প্রাঙ্গন শের-ই বাংলা নগরে বাণিজ্য মেলা করা সম্ভব হবে না। আগামী বছরের বাণিজ্য মেলা করার জন্য বিকল্প জায়গা খুঁজতে হবে ইপিবিকে।

কারণ পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী মেলা কমপ্লেক্স তৈরির জন্য বরাদ্দকৃত ১০ একর জায়গা ওপর অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ এখনো অন্ধকারেই রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ দিনের দাবি বাণিজ্য মেলার স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ঝুলে আছে।

এ প্রসঙ্গে ইপিবির উপ-সচিব বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, শের-ই বাংলা নগরের মত এত বড় পরিসরে মেলা করার মত জায়গা নেই। যদিও পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্য মেলার জন্য ১০ একর জায়গা বরাদ্দ রয়েছে। এটা তুলনামূলক কম। বর্তমানে যে স্থানে মেলা চলছে সে জায়গার পরিমাণ প্রায় ৪২ একর।

স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীনের যে কোম্পানিকে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ দেয়া হয়েছে তারা চাচ্ছেন এক তলা বা দুই তলা বিল্ডিং তৈরি করে দিতে। কিন্তু সরকার বহুতল ভবন করতে চায়। মেলা প্রাঙ্গন তৈরির কাজ ওই অবস্থায় আছে। এখনও কোনো কাজ শুরু হয়নি। আর এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় ও চীন সরকারের সমন্বয়হীনতার কারণে নির্মাণ কাজ এগুচ্ছে না।

এদিকে মেলার অবকাঠামো উন্নয়নে প্রতিবছর ব্যবসায়ীদের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এছাড়া ইপিবি বলছে সব খরচ মিলিয়ে তাদের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, মেলার স্থায়ী জায়গার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি, আর সরকারও প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। কিন্তু বাস্তবতা শূন্য।

তিনি আরো বলেন, মেলার অস্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণে প্রতিবছর প্রায় দুই থেকে আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এতোসব ক্ষতির পরেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নির্মাণ কাজ হচ্ছে না। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যাতে দ্রুত স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গন তৈরি হয়। যদি সচিবালয় তৈরির কাজ শুরু হয় এবং পূর্বাচলে কাজও শুরু হয়নি তা হলে মেলা কোথায় হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মেলা বন্ধ থাকবে। কারণ ঢাকার শহরে মেলার করার এত বড় জায়গা নেই ।’

রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কমপ্লেক্স নির্মাণে ২০০৭ সালে রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে ১০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এরপরে ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীন সরকারের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইপিবির সার্বিক তত্ত্বাবধানে এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২৭৫ কোটি টাকা। বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০০৯ থেকে জুন ২০১২ পর্যন্ত। তবে এখনো কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৫ সাল থেকেই রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এ মেলার আয়োজন করে আসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি। মাসব্যাপী এ মেলার ১৯তম আসর চলছে।
বেঙ্গলিনিউজটেয়োন্টিফোর.কম