শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > ধান চাষে নতুন প্রতিবন্ধকতার নাম পলিথিন; মাটির গভীরে বাঁচে চার’শ বছর

ধান চাষে নতুন প্রতিবন্ধকতার নাম পলিথিন; মাটির গভীরে বাঁচে চার’শ বছর

শেয়ার করুন

সাদিকুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার ॥
চলছে বোরো চাষের মৌসুম, সারা দেশের মত গাজীপুরের ভাত যোদ্ধারাও মাঠে নেমে পরেছেন অন্ন উৎপাদনে। দীর্ঘ জলাবদ্ধতা কাটিয়ে নিম্নাঞ্চল যখন চাষের জন্য প্রস্তুত, ঠিক তথনই চাষের কাজে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বানের জলে ভেসে আসা পলিথিন। ধানের ক্ষতিকর পতঙ্গ কীটনাশক দিয়ে হত্যা করা গেলেও মাটিতে মিশে থাকা পলিথিন বেঁচে থাকে চার’শ বছর। যা মাটির গভীরে মিশে জমিকে করছে চাষ অনুপযোগী। তাই চাষের জন্য পলিথিন অপসারণ জরুরী। গভীর পর্যন্ত মিশে থাকায়, হাল চাষের পরেও বের হয়ে আসে পলিথিনের টুকরো। মাটিতে পরার পর বা মাটির একটু নিচে চলে যাওয়ার পর সেই পলিথিনের মধ্য দিয়ে নিচের দিকে আর পানি যেতে পারে না। অর্থাৎ মাটির স্তরে পানি ও পুষ্টি উপাদানের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। পলিথিন মাটির অভ্যন্তরে চলে যাওয়ায় মাটিতে থাকা অণুজীবগুলোর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে না। মাটির গুণগত মান ও উর্বরতা হ্রাস পাওয়ায় শস্যের ফলন কমে যায়। এমনকি মাটির নিচের পলিথিনের কারণে গাছ সঠিকভাবে তার খাবার পায় না। গাছ দুর্বল হওয়া মানে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। অর্থাৎ ফলন কম এবং রোগ বালাইয়ের সহজ আক্রমণ।

গাজীপুরের সদরের পিরুজালী গ্রামে লবণদহ নদীর পারে গিয়ে দেখা যায়, হাল চাষের পর চাষীরা মাটির গভীরের পলিথিন অপসারণের চেষ্টা করছেন, পাশেই আরেক ক্ষেতে সারি ধরে পলিথিন জমানো। কৃষকরা জানান, পলিথিনের জন্য তাদের চাষের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে তুলনায় আশানুরূপ ফলন হয় না।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার সাজিদুর রহমান পলিথিনের অপকারিতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, সত্যিই এটি একটি দুঃখজনক ব্যাপার। কারণ চাষের ক্ষেত্রে এর কোন রাসায়নিক সমাধান নেই, মাটি থেকে অপসারণই একমাত্র সমাধান। যা চাষের খরচ বৃদ্ধি করে দেয়। এর দায় কিন্তু আমাদেরই, কলকারখানা ও আবাসিক বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এমনটা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। এমন দুর্ভোগ চলমান থাকলে চাষীরা ধীরে ধীরে চাষে নিরুৎসাহিত হবে। তিনি আরো বলেন, সচেতন না হলে তা দেশের মোট উৎপাদিত খাদ্যের হিসাবে ধাক্কা দিতে পারে। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাই হতে পারে এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান।