স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। একই সাথে ৪৪তম বর্ষে পদার্পণ করল বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এক সাথে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করলেও এবার অন্যভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
পৃথক পৃথকভাবে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্নি সরণিতে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা , জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়ানোর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ বছর পূর্তির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন শিক্ষক-শক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সমন্বয়ক অধ্যাপক হানিফ আলী ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের চার জন ডিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।
উদ্বোধনের পরে বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। র্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একটি সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক – শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে অতীতের রোমন্থন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
র্যালি পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে দ্রুত অপসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম সচল করার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের র্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সহস্রাধিক লোক অংশ নেয়।
পরে শহীদ মিনারের পাদদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে একটি মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। মানববন্ধনে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষক সমিতির নেতারা।
এদিকে সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ বছর পূর্তির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এম এ মতিন ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আফসার আহমদ। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিস্ট্রারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।
র্যালি পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা)অধ্যাপক এম এ মতিন ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন)আফসার আহমদ বক্তব্য রাখেন।
বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্ত মঞ্চে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রিয়াল অ্যাডমিরাল এসএম আহসান দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগ চারটি (অর্থনীতি, ভূগোল, গণিত ও পরিসংখ্যান)। বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে ৩৪টি বিভাগ এবং দুটি ইনস্টিটিউটে ১২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছে ছয় শতাধিক। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ১২টি আবাসিক হল রয়েছে। এবং চারটি হল নির্মাণাধীন।