আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
দীর্ঘদিনের অবিরাম পরিশ্রম আর সাহসী প্রতিবেদনের মাধ্যমে ফিলিপাইনে সাংবাদিকতার প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছেন মারিয়া রেসা। আট বছরের পুরনো এক প্রতিবেদনের জেরে সম্প্রতি তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। এর জন্য ছয় বছরের জেলও হতে পারে মারিয়ার। সরকারের সঙ্গে বিবাদের কারণেই তাকে এ সাজা দেয়া হচ্ছে বলে মত অনেকের। এটিকে ফিলিপাইনের গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় দুতের্তে সরকারের হস্তক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন কেউ কেউ।
কে এই মারিয়া?
মারিয়া রেসার জন্ম ফিলিপাইনে। তবে সামরিক আইন জারি হওয়ার পর ছোট থাকতেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে বিখ্যাত প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনো শেষে শেঁকড়ের টানে আবারও জন্মস্থানে ফিরে আসেন।
আশির দশকে যখন মারিয়া ফিলিপাইনে ফেরেন, তখন সেখানে জনঅভ্যুত্থান চলছিল। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সেই সময় রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছিল স্বাধীনচেতা মানুষজন। তখন থেকেই লেখালেখিতে হাতেখড়ি হয় মারিয়ার।
সাংবাদিকতার মাধ্যমেই আশির দশকে প্রথমবারের মতো রড্রিগো দুর্তেতের মুখোমুখি হন তিনি। সেইসময় দুতের্তে ছিলেন দাভো শহরের মেয়র।
ধীরে ধীরে সিএনএন, এবিএস-সিবিএনের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন মারিয়া রেসা।
২০১২ সালে র্যাপলার নামে নিজস্ব অনলাইন নিউজ সাইট চালু করেন ৫৫ বছর বয়সী এ নারী। সঙ্গে নেন একঝাঁক অনুসন্ধানী সাংবাদিক।
অল্প সময়েরে মধ্যেই চমকপ্রদ সব খবরের কারণে বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সাইটটি। নারীর প্রতি অবিচার, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধেও সরব ছিলেন মারিয়া।
প্রেসিডেন্ট দুতের্তের অন্যতম সমালোচক হওয়ায় সরকারের বিরূপ নজরে পড়েন তিনি। র্যাপলারের সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্টের অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দেয়া নিষিদ্ধ করা হয়। গত বছর ওয়েবসাইটটির লাইসেন্সই বাতিল করে দেয় ফিলিপিনো সরকার।
ওই বছর আইনি জটিলতায় অন্তত দু’বার গ্রেফতার হন মারিয়া। তবে রাজনৈতিক স্বার্থে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন এ সাংবাদিক।
সাহসী প্রতিবেদন আর সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার মারিয়া রেসা শুধু ফিলিপাইনেই নয়, খ্যাতি কুড়িয়েছেন বিশ্বজুড়ে। ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি