শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > সারাদেশ > কালীগঞ্জে উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত শিশুটির পরিচয় মিলেছে, আটক ২

কালীগঞ্জে উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত শিশুটির পরিচয় মিলেছে, আটক ২

শেয়ার করুন

কালীগঞ্জ ব্যুরো ॥
কালীগঞ্জে জঙ্গল থেকে উদ্ধারকৃত নির্মমতার শিকার অজ্ঞাত শিশুটির পরিচয় মিলেছে। তার নাম মো. মাহবুব (১১)। মাহবুব ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানার বেদগাছিয়া এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে। অপহরণের পর মাহবুবকে মারধর করে গাজীপুরের কালীগঞ্জের আজমতপুর এলাকায় একটি রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় দূর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে র‌্যাব-১৪-এর সদস্যরা।

আটকরা হলো ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার পাঁচকাহনিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে আক্তারুজ্জামান(১৭) এবং গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার আজমতপুর গ্রামের সোবাহান খানের ছেলে মো. জামান (৪৯)।

শুক্রবার বিকালে চাচা মতিউর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। মাহবুব দুই বছর ধরে গাজীপুরের পূবাইল এলাকার হায়দরাবাদ হাজী ফজলুল হক হাফিজিয়া ও এতিমখানা মাদ্রাসার লেখাপড়া করছিল। শুক্রবার পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি ।

মাহবুবের চাচা মতিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গত শনিবার তাকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা মোবাইর ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল তার বাবার কাছে। কিন্তু অপহরণের পর তার অবস্থান কোথায় তা জানা যায়নি। শুক্রবার পত্রিকায় খবর দেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তিনি ভাতিজা মাহবুবকে শনাক্ত করেন। মতিউর রহমানের ধারণা, অপহরণকারীরা মাহবুবকে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে মারধর করে। এতে মাহবুব জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে মৃত ভেবে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে।

র‌্যাব-১৪-এ সহকারি পরিচালক (সহকারি পুলিশ সুপার) জুনায়েদ আফরাত জানান, মোবাইল ফোনের কল ট্রাকিং করে শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহের গৌরিপুর এলাকা থেকে মাহবুবের সাবেক সতীর্থ মো. আক্তারুজ্জামানকে (১৭) আটক করা হয়। পরে আক্তারুজ্জামানের দেয়া তথ্যমতে একই রাতে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে মো. জামান (২৯) নামে এক ব্যবসায়িকে আটক করা হয়। আক্তারুজ্জামানের স্বীকরোক্তিমতে জানা যায়, ময়মনসিংহের নান্দাইলে একই মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত সময়ে মাহবুবের সঙ্গে আক্তারুজ্জামানের শত্রুতা সৃষ্টি হয়। পরে মাহবুব গাজীপুরের কালীগঞ্জের মাদ্রাসায় গিয়ে ভর্তি হয়। সম্প্রতি আক্তারুজ্জামান গাজীপুরের পুবাইলের মাদ্রাসায় ভর্তি হতে গেলে মাহবুব মাদ্রাসা শিক্ষকদের কাছে আক্তারুজ্জামান খুব খারাপ ছেলে বলে তাকে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে শত্রুতা দেখা দেয়। পরে গত শনিবার বিকালে মাহবুবকে কৌশলে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে আক্তারুজ্জামান। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যবসায়ি মো. জামান। পরে তাকে মারধর করার পর মারা গেছে ভেবে রাতে স্থানীয় আজমতপুর-ইটাখোলা সড়কের পাশে জঙ্গলে ফেলে রেখে যায় তারা। তারপর মোবাইল ফোনে মাহবুবের বাবার কাছে ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আক্তার। এ ব্যাপারে মাহবুবের বাবা পুবাইল থানায় জিডি এবং র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করলে র‌্যাব ফোনের কল ট্র্যাকিং করে শুক্রবার তাদের আটক করা হয়েছে।

গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই ) কাজী কামাল বলেন, গত রোববার সকালে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার আজমতপুর এলাকার মহাসড়কের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় মাহবুবকে (অজ্ঞাত ) উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাকে কালীগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে সেখান থেকে রাজধানীর উত্তরার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরদিন সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি ইউনিটে (তিন)। সে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ইউনিটের অধীনে ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভেতরের বারিন্দায় ১৩ নম্বর বেডে তার চিকিৎসা চলছে।