স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুরে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত মোসা: হাজেরা বেগম (১৭) জামালপুর জেলার আগ্রাখালি গ্রামের আব্দুল হাকিমের কন্যা। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাছা থানার কুনিয়া পাছঁর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আব্দুল হাকিম বাদি হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে মেট্রোপলিটন গাছা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। পুলিশ নিহতের স্বামী মো: মামুন আকন্দ (২৩) এবং শ্বশুড় রমজান আলী (৫০) কে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানার এনায়েতপুর এলাকায়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত আড়াই বছর আগে পারিবারিক ভাবে মামুনের সাথে হাজেরার বিয়ে হয়। গামের্ন্সে চাকুরীর সুবাদে বিয়ের পর মামুন তার স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর কুনিয়া পাছঁর এলাকার ভাড়া বসবাস করতে থাকে। কিছুদিন যেতে না যেতেই মামুনের ভাই এবং বাবার কু-পরামর্শে যৌতুকের জন্যে শারীরক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। পরে গত তিন মাস পূর্বে মামুনকে ব্যবসা করার জন্যে ১ লাখ বিশ হাজার টাকা দেয়া হয়। সে টাকা বিভিন্ন খরচ করে আবার তিন লাখ টাকা দাবি করে গর্ভবতী হাজেরার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে। এর মধ্যে গত এগারো দিন আগে তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। অসুস্থ হাজেরা দেখতে তার মা মোসা: মছিরন গত ৭ মার্চ রবিবার মামুনদের ভাড়া বাসায় দেখতে যায়। সেখানে হাজেরাকে গুরুত্ব অসুস্থ দেখে তাদের বাসায় নিয়ে আসার জন্য বললে মামুন দাবিকৃত তিন লাখ টাকা দিলে চিকিৎসা করাবে বলে বিভিন্ন হুমকি ও অশ্লীল গালিগালজ বাসা থেকে দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে গত মঙ্গলবার সকালে হাজেরার পিতা তাকে দেখার জন্য গেলে হাজেরাকে দেখতে না দিয়ে যৌতুকের দাবিকৃত টাকা চায় এবং টাকা না দিলে হাজেরার কোন চিকিৎসা হবে না বলে জানিয়ে তাকেও তাড়িয়ে দেয়। পরে ওই দিনই সন্ধ্যায় গুরুত্বর অবস্থা শুনে সেখানে গিয়ে হাজেরাকে ঘরের ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় এক ডাক্তার খবর দিলে ডাক্তার এসে হাজেরাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় মামুন ও তার পিতা রমজান আলীকে আটক রেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়।
মেট্রোপলিটন গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: ইসমাইল হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাত সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে নিহত স্বামী ও শ্বশুড়কে গ্রেফতার করা হয়। মৃতদেহ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে নিহতের পিতা একটি এজাহার দায়ের করেছে। দুজনকে গ্রেফতার করা গেলেও একজন আসামী পলাতক আছে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।