স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজারে গাছা উচ্চ বিদ্যালয় ঘেষেই নির্মাণ করা হয়েছে লামিয়া গার্মেন্টস এক্সেসরিস নামের এক প্লাস্টিক প্যাক তৈরীর কারখানা। কারখানায় প্লাস্টিক দানা গলিয়ে প্যাক তৈরির সময় উৎকট ও ঝাঁঝালো গন্ধে ওই স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকদের পাঠদান তথা শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গাছা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ জানান, কারখানায় যখন প্লাস্টিক দানা গলিয়ে প্লাস্টিকের মালামাল তৈরির কাজ শুরু হয়, তখন উৎকট ও ঝাঁঝালো দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এসময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনেকেই তা সহ্য করতে না পেরে বমি ও মাথা ঘুরে পড়ে যায় এবং পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হয়।
এ ব্যাপারে লামিয়া গার্মেন্টস এক্সেসরিস কারখানার মালিক মো. শহিদুল ইসলাম সিদ্দিক জানান, পরিবেশ ছাড়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে সরকারি সকল প্রক্রিয়া মেনেই ২০১৪ সাল থেকে এ কারখানা চালু করি। আগে মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় ছিল পরে ২০১৭ সাল সেখান থেকে গাছা এলাকায় কারখানাটি স্থানান্তর করা হয়েছে। এখানে পোশাক কারখানায় ব্যবহারের জন্য পলিপ্যাক এবং গাম টেপসহ গার্মেন্টস এক্সসরিস তৈরি করা হয়। এসব তৈরির সময় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন না। কেউ যদি অভিযোগ করে থাকে তা সঠিক নয়। ওই স্কুলের নো-অবজেকশন সনদ নিয়েই পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নিয়েছি।
প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ জানান, প্লাস্টিক দানা গলিয়ে ওই কারখানায় প্যাকেট তৈরি করা হবে এমন তথ্য গোপন রেখে শুধু গামেন্টস পণ্য তৈরি হবে বলে আমার কাছ থেকে ২০১৬ সালে নো-অবজেকশন সনদ নেয়া হলেও ২০১৭ সালে কারখানাটি আমাদের স্কুলের পাশে স্থানান্তর করা হয়। আমার সঙ্গে ব্লাকমেইল করে সেখানে প্লাস্টিক দানা গলিয়ে পরিবেশ দূষণ করে প্লাস্টিক প্যাকেট তৈরি করা হচ্ছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গাছা স্কুলের ৮ম শ্রেনির ছাত্র মো. শরীফ জানান, কারখানাটিতে প্লাস্টিক প্যাক তৈরিকালে অসহনীয় দুর্গন্ধ বের হয়। তখন আমাদের ক্লাশ বসে থাকা সমস্যা হয়। দরজা-জানালা বন্ধ করে দমবন্ধ অবস্থায় ক্লাশ করতে হয়।
একই স্কুলের ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার (কেবিনেট সদস্য), ১০ম শ্রেণির (ব্যবসায় শিক্ষার) ছাত্রী বর্ণা ইসলাম জানান, দানা গলিয়ে প্লাস্টিক প্যাক তৈরির সময় উৎকট ও ঝাঁঝালো গন্ধে আমাদের শিক্ষার্থীদের শ^াস কষ্ট, বমি, মাথা ঘুরানো, অজ্ঞান হওয়াসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সালাম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে কারখানার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।