জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণ কেন্দ্র সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠ এখন বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। যে মাঠে বিশুদ্ধ বায়ু সেবনের জন্য শহরের অনেক মানুষ বেড়াতে যান, যে মাঠে প্রতিদিন কয়েকশ’ শিশু কিশোর ছুটাছুটি করে, মেতে উঠে বিভিন্ন খেলায়, নির্মল আনন্দ লাভের জন্য যে মাঠটিকে বেছে নিয়েছেন নানা বয়সের নারী পুরুষ । তারা এখন মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন। বিশুদ্ধ বাতাসের পরিবর্তে সারা মাঠে এখন বইছে বিষাক্ত বাতাস। মাঠের বিরাট অংশ জুড়ে ঠিকাদারেরা অসংখ্য চুলা বানিয়ে পুড়ছে বিটুমিন। বিটুমিন পোড়ানোর ফলে কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে গোটা মাঠ। বিটুমিন মেশানো খোয়া ও পাথর নিয়ে মাঠের মধ্যে দিয়েই অবিরাম ছুটছে পাওয়ার ট্রলি। আর মাঠে খেলাধূলারত শিশু কিশোরেরা হয়ে পড়ছে আতঙ্কগ্রস্ত। এসব বলার বা দেখার কেউ নেই। তাছাড়া এই মাঠের একটি অংশ দখল করে দোকান বসিয়েছে পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ীরা।
শহরের বিভিন্ন সড়কে এখন সংস্কারের কাজ চলছে। পাথর খোয়া মজুদ করা, বিটুমিনের ড্রাম মজুদ করা ও পোঁড়ানোর জন্য অনেক জায়গা থাকতে এই মাঠটিকেই বেছে নিয়েছেন ঠিকাদারেরা। সারাদিন কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হড়ে পড়ে মাঠসহ আশেপাশের এলাকা। রবিবার মাঠের মধ্যে বিটুমিন মেশানো পাওয়ার ট্রলি ধাক্কা দেয় মনের আনন্দে খেলতে থাকা এক শিশুকে। শিশুটির পিতা হাজীপাড়ার শামসুল দ্রুত শিশুটিকে নিয়ে যান হাসপাতালে। তিনি বলেন, খেলার মাঠে এই রকম পরিবেশ দূষন তিনি আগে কোনদিন দেখেননি। শহরের বাসিন্দা মোতাহার হোসেন ও আনোয়ার ফারুক প্রতিদিন বিকালে মাঠে এক ঘন্টা করে হাটেন। কিন্তু বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার জন্য তাঁরা আর মাঠে আসেননা। চিকিৎসকগণ জানান, মাঠের এখন যা অবস্থা বিশেষ করে বিটুমিন পোঁড়ানোর কালো ধোঁয়াতে শিশুদের মারাত্মক স্বাস্থ্যহানী ঘটতে পারে।
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আখতারুজ্জামান জানান, মাঠের এক কোনে সীমিতভাবে কাজ করবে বলে তাঁর কাছে ঠিকাদার অনুমতি নিয়েছিল। কিন্তু এই সুযোগে তারা বিরাট এলাকা জুড়ে বিটুমিন পোড়ানো শুরু করেছে। তিনি মাঠের দুষণ বন্ধ করার ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।ৎ