রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > রেলদুর্ঘটনা এড়াতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায় সরকার

রেলদুর্ঘটনা এড়াতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায় সরকার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বিভিন্ন সময় রেলদুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। তাই রেলের দুর্ঘটনা এড়াতে সরকার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায়। এমনটাই জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। সিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সিঙ্গেল লাইনের বেশ কিছু লাইনকে ডাবল লাইনে রুপান্তর করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

মঙ্গলবার ঢাকার রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে (যমুনা) সরকারের ১ বছর পূর্তিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অর্জন ও আগামীর লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রেলপথমন্ত্রী বলেন ‘রেলের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য আমরা ভবিষ্যতে প্রযুক্তি ব্যবহার করবো। আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে যেন দুর্ঘটনা এড়ানো যায়, সে বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযোগ হচ্ছে সিডিউল বিপর্যয়। আমাদের অধিকাংশ রেল লাইন সিঙ্গেল। পশ্চিম অঞ্চলের সব রেলকেই ঈশ্বরদী হয়ে ঢাকা আসতে হয়। ঈশ্বরদী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত একটামাত্র লাইন। এ লাইনে দিনে ২২টি ট্রেন চালানোর অনুমোদন রয়েছে। সেখানে আমরা ট্রেন চালাচ্ছি ৪২টি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতেও সময় লাগে।’

তিনি আরও বলেন, সিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে ডাবল লাইন ডুয়েলগেজ বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় সেতু হচ্ছে। এছাড়া ওই লাইনে বেশ কিছু ডাবল রেললাইন হচ্ছে। এসব প্রকল্প শেষ হলে এ সিডিউল বিপর্যয় আর থাকবে না।

নূরুল ইসলাম আরও বলেন, আমি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর সময়ানুবর্তিতা ও নিরাপত্তার সাথে ট্রেন পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করি। ফলে ট্রেন দুর্ঘটনার পরিমাণ কমানো সম্ভব হয়েছে। এরপরেও গত এক বছরে বেশ কিছু দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ২০১৯ সালে সর্বমোট ১২৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩৯ জন মৃত্যুবরণ করেন এবং ১৫৫ জন আহত হন।

১২৯টি দুর্ঘটনার মাঝে ১০টি দুর্ঘটনা ঘটে লেভেল ক্রসিং গেটে; যার কারণে ১৮ জন নিহত হন। লেভেল ক্রসিং গেটের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত রেলওয়ের গাফিলতি থাকে না। সিগনাল অমান্য ও ডিরেইলমেন্টজনিত ১১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে; যাতে ২০ জন নিহত হন বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, এসব দুর্ঘটনার মাঝে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচালে সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। এই দুর্ঘটনায় ৪ জন যাত্রী নিহত হন এবং ৬৪ জন আহত হন। এছাড়া গত ১২ নভেম্বর রাত পৌনে ৩টায় আখাউড়া-লাকসাম সেকশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্দবাগ স্টেশনে একটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় উদয়ন এক্সপ্রেসের ১৭ যাত্রী মৃত্যুবরণ করেন এবং ৫৪ যাত্রী আহত হন। আহত-নিহত যাত্রীদের সকলেই উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ছিলেন।

এছাড়াও ১৪ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেসের ৮টি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং ইঞ্জিনসহ আরও দুইটি বগিতে আগুন ধরে যায়। যাত্রীরা হতাহত না হলেও রেলওয়ের সম্পদের অনেক ক্ষতি হয়। এ তিনটি দুর্ঘটনা ছাড়া ২০১৯ সালে তেমন কোন বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেনি।

মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনায় কোন মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৩৯ যাত্রীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি । একইসাথে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি যোগ করে নূরুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, এসব দুর্ঘটনায় রেল বিভাগের যাদের গাফেলতি পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে শস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া যারা নিহত ও আহত হয়েছে তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে সরকার।