স্টাফ রিপোর্টার ॥
দুর্নীতি, মাদক ও টেন্ডারবাজিবিরোধী চলমান শুদ্ধি অভিযানের সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, রহস্যঘেরা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ছিঁচকে দুর্নীতিবাজদের শত শত কোটি টাকা, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের নেতা ও আসল হোতাদের ধরা হচ্ছে না।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, কথিত শুদ্ধি অভিযানের মুখোশে দুর্নীতির মূলহোতাসহ তাদের তৈরি কোনো বিষবৃক্ষকে আড়াল করা হচ্ছে কিনা এ প্রশ্ন জনগণের মুখে মুখে। আওয়ামী লীগের পুরনো দস্তাবেজ ঘাটলেও দেখা যাবে দুর্নীতি ও গণতন্ত্রহীনতা সমানভাবে অস্তিত্বমান ছিল।
মার্কিন মন্ত্রীর বক্তব্যের বরাত দিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী অ্যালিস জি ওয়েলস বলেছেন, ‘একাধিক সমমনা অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন অবাধ কিংবা সুষ্ঠু হয়নি। ওইসব নির্বাচনের আগে সিভিল সোসাইটি, স্বাধীন গণমাধ্যম এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতি পুলিশি নিপীড়ন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই রিপোর্টে বাংলাদেশ সরকারের সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোকে কাজ করতে না দেয়া, অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোকে অবাধে তাদের মতামত প্রকাশ করতে না দেয়া এবং গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় রাজনৈতিকবিরোধী দলকে তার আইনসঙ্গত ভূমিকা রাখতে না দেয়ায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রিপোর্টে আরও বলা হয়, সংকুচিত হয়ে পড়া পরিবেশ এবং নিষেধাজ্ঞামূলক খসড়া নিয়ম-কানুনের কারণে সিভিল সোসাইটি হুমকিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কারণে সাংবাদিকরা সেলফ সেন্সরশিপ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরকার দলীয় নেতারা গুম-খুনের সওদাগর হয়ে উঠছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুধু বিদেশি শাসনের অবসানে মানুষের স্বাধীনতা আসে না। প্রকৃত স্বাধীনতা আসে নির্ভয়ে চলাচলে ও মতপ্রকাশ ও দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসীদের নিয়ে সংগঠন গড়ে তোলায়। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ঠাণ্ডা মাথায় গুম থেকে শুরু করে খুনের সওদাগর হয়ে উঠেছে। তারা চূড়ান্তভাবে গণতন্ত্রকে নিশ্চিহ্ন করতেই ‘নির্দোষ’ খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে। আমরা এ মুহুর্তে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।